বিশ্ব

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে ‘নো কিংস’ স্লোগানে ঐতিহাসিক বিক্ষোভ

Over 2,500 simultaneous 'No Kings' protests against Trump were held across the US on Saturday, joined by celebrities and politicians, with the movement also reaching Europe.

ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর্তৃত্ববাদী নীতির প্রতিবাদে এবং গণতন্ত্রের সুরক্ষার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে 'নো কিংস' স্লোগানকে সামনে রেখে এক ঐতিহাসিক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ব্যানার হাতে অংশ নেন। রয়টার্স জানিয়েছে, নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগোর গ্রান্ট পার্ক এবং মায়ামিসহ দেশজুড়ে আড়াই হাজারের বেশি স্থানে একযোগে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান না হয়ে রাজা হিসেবে স্বৈরশাসন চালাচ্ছেন। তাদের মূল বক্তব্য হলো, ট্রাম্প তার কার্যনির্বাহী ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করছেন এবং জনগণ এই অতিরিক্ত ক্ষমতা সহ্য করবে না। বিক্ষোভকারীরা ব্যানার, ব্যালুন ও নানা স্লোগান হাতে মিছিল করেছেন, যা আধুনিক আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নাগরিক প্রতিবাদগুলোর মধ্যে অন্যতম হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আনুমানিক ৩০ লাখ মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

আঠারো দিন ধরে চলা সরকারি শাটডাউনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত এই সমাবেশগুলোতে বক্তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ট্রাম্পের কর্মকাণ্ড মার্কিন গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক ভারসাম্যের জন্য সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ও সুসংগঠিত রাখতে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন তাদের আইনজীবী দল নিয়ে মাঠে কাজ করেছে।

এই বিক্ষোভে রাজনীতিক, শিল্পী, সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে প্রবীণরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন। অভিনেত্রী জেন ফন্ডা, কেরি ওয়াশিংটন, সংগীতশিল্পী জন লেজেন্ড, অভিনেতা অ্যালান কামিং ও জন লেগুইজামো-এর মতো খ্যাতনামা তারকারাও 'নো কিংস' আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।

শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র নয়, বিক্ষোভের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপেও। যুক্তরাজ্য, মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে শত শত মানুষ ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন।

বিক্ষোভের আগে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, "তারা আমাকে রাজা বলে ডাকছে, কিন্তু আমি কোনো রাজা নই।" তবে জনগণের এই বিশাল সমাবেশ দেখিয়ে দিল যে, মার্কিন নাগরিকরা তাদের রাষ্ট্রপ্রধানের কাছ থেকে গণতান্ত্রিক আদর্শের বাইরে কোনো কর্তৃত্ববাদী আচরণ মেনে নিতে প্রস্তুত নন।


ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বৈরশাসনের অভিযোগে জনগণের এই বিশাল প্রতিবাদ মার্কিন গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনা করলো।