মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) নিয়োগ পরীক্ষা ঘিরে প্রযুক্তিনির্ভর এক বড় ধরনের প্রতারণা রুখে দিয়েছে সংস্থাটি। শনিবার অনুষ্ঠিত ১৭তম ও ১৮তম গ্রেডের নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগে মোট ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন পরীক্ষার্থী অন্যের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন (প্রক্সি), এবং ৫ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে অত্যাধুনিক স্পাই কমিউনিকেশন ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।
ডিএনসি কর্তৃপক্ষ এই অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তাৎক্ষণিকভাবেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন এবং আটক ১৩ জনসহ অভিযুক্ত ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড প্রদান করেন। নিয়োগ পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের এই কঠোর অবস্থান একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ।
সংস্থাটির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ কর্মকর্তা) মোস্তাক আহমেদ জানান, ডিএনসির কার্যক্রম সুদৃঢ় করার লক্ষ্যেই ১০৫টি সিপাহী (১৭তম গ্রেড) ও ১২টি ওয়্যারলেস অপারেটর (১৮তম গ্রেড) পদে নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই পদে মোট ৩৭ হাজার প্রার্থী আবেদন করেছিলেন।
শারীরিক ফিটনেস ও প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পর লিখিত পরীক্ষার জন্য ১,২৮০ জন প্রার্থীকে যোগ্য ঘোষণা করা হয়। শনিবারের লিখিত পরীক্ষায় মোট ১,২০৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন।
লিখিত পরীক্ষার আগে বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিএনসি কর্তৃপক্ষ একটি সংঘবদ্ধ চক্রের বিষয়ে নিশ্চিত ছিল। ফলে পরীক্ষাকেন্দ্রে অত্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা ও নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর ফলে প্রক্সি পরীক্ষার্থী এবং প্রযুক্তি ব্যবহারকারী ৫ জন পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। প্রতারণার জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো ছিল ক্ষুদ্রাকৃতির ইয়ারপিস মাইক্রোফোন এবং ক্রেডিট কার্ড আকৃতির জিএসএম কার্ড, যা বাহ্যিকভাবে শনাক্ত করা ছিল কঠিন।
ডিএনসি সূত্র আরও জানায়, এই প্রতারণা চক্রটি বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছিল। তবে কর্তৃপক্ষের পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা এবং দ্রুত পদক্ষেপের কারণে এই প্রচেষ্টা এবার ব্যর্থ হয়েছে, যা প্রমাণ করে ডিএনসি একটি স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
নিয়োগ পরীক্ষায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতারণার এই কৌশল নিয়োগকর্তাদের জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, যা মোকাবেলায় আরও অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রবর্তন জরুরি।
