বাণিজ্য

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশ প্রত্যাখ্যান: শিক্ষকরা চান ২০% বাড়িভাড়া ও ৭৫% উৎসব ভাতা, নতুবা আন্দোলন

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশ প্রত্যাখ্যান: শিক্ষকরা চান ২০% বাড়িভাড়া ও ৭৫% উৎসব ভাতা, নতুবা আন্দোলন

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বাড়ি ভাড়া ভাতা ৫ শতাংশ (সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা) বৃদ্ধিতে সম্মতি জানাতে পারেননি। এই আংশিক সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে তারা তাদের মূল দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় শহীদ মিনারে চলমান অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।

রোববার (১৯ অক্টোবর) অর্থ বিভাগের দেওয়া প্রজ্ঞাপন জারির পরপরই এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী তার ফেসবুক পোস্টে এই প্রত্যাখ্যানের কথা জানান। তিনি বলেন, সরকারি এই উদ্যোগ তাদের আন্দোলনের একটি প্রাথমিক ফল হলেও, এটি তাদের মূল দাবিগুলোর তুলনায় সামান্য।

শিক্ষক নেতারা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তাদের দাবিগুলো হলো—মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা। এই তিনটি মূল দাবি মেনে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সকল কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

বর্তমানে রোববার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় শহীদ মিনারে শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের অষ্টম দিনের অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারি আদেশের পর অনেকেই আশা করেছিলেন, হয়তো আন্দোলন স্থগিত হবে, কিন্তু শিক্ষকদের কঠোর অবস্থানে সে আশা তিরোহিত হলো।

আন্দোলনের কৌশল হিসেবে শিক্ষকরা রোববার দুপুর ১২টায় একটি নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। এটি হলো শিক্ষাভবন অভিমুখে ‘ভুখা মিছিল’। এই প্রতীকী মিছিলের মাধ্যমে তারা সরকারের কাছে তাদের আর্থিক দুরবস্থা এবং অনাহারে থাকার বার্তা পৌঁছে দিতে চান।

অন্যদিকে, এই আন্দোলন প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগের উপসচিব মিতু মরিয়মের স্বাক্ষর করা অফিস আদেশে বলা হয়েছিল, ৬টি শর্ত সাপেক্ষে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া ভাতা (সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা) পাবেন। এই আদেশ আগামী ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

তবে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এই আংশিক ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাবকে জীবনযাত্রার ব্যয় ও মূল্যস্ফীতির সাপেক্ষে অত্যন্ত নগণ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাদের মূল সংগ্রাম এখন আর শুধুমাত্র ভাতা বৃদ্ধি নয়, বরং এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থার পরিপূর্ণ জাতীয়করণ

শিক্ষকদের এই কঠোর হুঁশিয়ারি এবং সরকারি প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যানের ঘটনা শিক্ষামন্ত্রণালয় এবং সরকারের উচ্চমহলকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। জাতীয়করণের দাবিতে এই আন্দোলন নতুন করে তীব্রতা পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।