বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নে সংঘটিত এক আলোচিত লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মামলায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ছয়জন নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গত বছরের ৫ আগস্ট রাতে একটি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার দোকানে এই হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
আজ রোববার বরগুনার দ্রুত বিচার আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম শরিয়ত উল্লাহ এই ছয়জনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি মো. ইসরাত হোসাইন সুমন আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন মো. হায়াত মাহমুদ মিল্টন, মো. সোলায়মান কবির, মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে জামাল মল্লিক, এমদাদুল হক মিলন, মো. আকতারুল হক ও মো. শাহজাহান মুন্সী। তারা সবাই ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের পদে রয়েছেন। তবে, একই মামলায় অভিযুক্ত অপর এক আসামি সাইফুল প্রিন্সকে আদালত জামিন দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান-এর স্ত্রী মুন্নি বেগম বাদী হয়ে গত বছরের ২৭ আগস্ট ২২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
বাদী মুন্নি বেগম অভিযোগ করেন, তার স্বামী মনিরুজ্জামান মাইঠা ব্রিজের কাছে প্রায় ১৫ বছর ধরে সার-কীটনাশক, বীজ, মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশের ব্যবসা করেন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর রাত ৯টার দিকে আসামিরা প্রথমে তার দোকানে লুটপাট চালায় এবং পরবর্তীতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই অগ্নিসংযোগে তার ৪২ লাখ ৬৬ হাজার ৮০০ টাকার বিপুল ক্ষতি হয়।
মামলাটি আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বরগুনা থানার ওসিকে নয়জন আসামির বিরুদ্ধে এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দেন। বরগুনা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর আটজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। চার্জশিটভুক্ত আরেকজন আসামি কামরুল ইসলাম মিরাজ ঘটনার পর থেকেই পলাতক এবং বিদেশে চলে গেছেন বলে জানা যায়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল ওয়াসি মতিন জানান, তাদের আসামিরা জামিনে থাকা অবস্থায় কোনো শর্ত ভঙ্গ করেননি। তিনি আরও দাবি করেন যে, ৫ আগস্টের 'জুলাই যোদ্ধাদের' বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রত্যাহারের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এমতাবস্থায় জামিন নামঞ্জুরের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
