বিশ্ব

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি ভঙ্গ বিতর্ক: ইসরায়েলের ত্রাণ বাতিলের সিদ্ধান্তে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি ভঙ্গ বিতর্ক: ইসরায়েলের ত্রাণ বাতিলের সিদ্ধান্তে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা

যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যেই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে চরম মানবিক সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। রোববারের ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের ছয়জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য নিহত হওয়ার পর, ইসরায়েল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় সমস্ত ত্রাণ-সামগ্রী প্রবেশ বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে।

রোববার (১৯ অক্টোবর) গাজার আল-জাওয়াইদা শহরে এই সামরিক অভিযান চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। হামলায় আল-কাসেম ব্রিগেডের জাবালিয়া ব্যাটালিয়নের কমান্ডার ইয়াহিয়া আল-মাবহুহ নিহত হন। নিহত যোদ্ধারা উত্তর গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি অভিযানে ছিলেন এবং সমুদ্রতীরবর্তী আল-জাওয়াইদা শহরের উপকূলে একটি ছোট ক্যাফে লক্ষ্য করে এই বোমা হামলা চালানো হয়।

ইসরায়েলের দাবি, হামাসের সদস্যরা যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, আর তাই তারা এই অভিযান চালাতে বাধ্য হয়েছে। এই হামলার পরপরই ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশে গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম 'তাৎক্ষণিক ও অনির্দিষ্টকালের জন্য' স্থগিতের ঘোষণা দেয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযোগ, হামাস প্রকাশ্যে শান্তি চুক্তি ভেঙেছে।

অন্যদিকে, হামাস ইসরায়েলের এই দাবি কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। হামাস কর্তৃপক্ষ জোর দিয়ে বলেছে, প্রকৃতপক্ষে ইসরায়েলই বারবার বিমান হামলা চালিয়ে শান্তি চুক্তি অকার্যকর করার চেষ্টা করছে। তাদের মতে, এই হামলা সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে চুক্তির লঙ্ঘন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল, প্রতিদিন শত শত ট্রাক ত্রাণসামগ্রী নিয়ে গাজায় প্রবেশ করবে। গাজার লাখো মানুষ এই ত্রাণের ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল। ইসরায়েলের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে এই বিপুল সংখ্যক মানুষ খাদ্য, ওষুধ ও পানীয় জলের তীব্র সংকটে পড়বেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের অবরোধ এবং সীমিত ত্রাণ প্রবেশের কারণে গাজায় ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এখন হঠাৎ করে ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ হয়ে গেলে সেই বিপর্যয় ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও দুর্বল করে দিল এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুললো।