বিশ্ব

গাজায় হামাস নি রস্ত্রীক রণ ও অন্তর্বর্তী সরকার: ঐক্যবদ্ধ মিসর-তুরস্ক-কাতার জোট

গাজায় হামাস নি রস্ত্রীক রণ ও অন্তর্বর্তী সরকার: ঐক্যবদ্ধ মিসর-তুরস্ক-কাতার জোট

মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে এক নাটকীয় পরিবর্তন এনে, একসময়ের তিনটি বিপরীত মেরুর শক্তি—মিসর, তুরস্ক ও কাতার—গাজা উপত্যকার যুদ্ধ-পরবর্তী ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। মাত্র চার বছর আগেও এই তিন দেশের শাসকের এক মঞ্চে আসা ছিল অকল্পনীয়, কিন্তু আজ তারা যৌথ এক নথিতে স্বাক্ষর করে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের পুনর্গঠনে ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার করেছে।

এই চুক্তির প্রধান এজেন্ডা হলো: গাজায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা, বাজেট পুনর্গঠন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ। এই যৌথ পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

গার্ডিয়ানের রিপোর্ট অনুযায়ী, হামাস-ইসরাইল সংঘাতের অবসানের পর গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গঠিত হবে। সম্ভবত এই আন্তর্জাতিক বাহিনীর নেতৃত্বভার নেবে মিসর। আমেরিকার প্রস্তাব অনুসারে, এই আইএসএফ জাতিসংঘের ম্যান্ডেটের অধীনে কাজ করবে, তবে এটিকে জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক শান্তিরক্ষী বাহিনী হিসেবে গণ্য করা হবে না।

যদিও কায়রো এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা পাঠানোর বিষয়ে নীরব, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কূটনীতিকরা বলছেন, নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মিসরই সবচেয়ে বেশি আলোচিত। এই মিশনে সেনা পাঠানোর জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা। ইন্দোনেশিয়া প্রকাশ্যে গাজায় ২০ হাজার সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে, তবে তারা স্পষ্ট করেছে যে তা জাতিসংঘের নির্দেশিত শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হতে হবে। আজারবাইজানও এই মিশনে সেনা পাঠাতে সম্মত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান গত মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে ট্রাম্পকে জানিয়েছিলেন, তুরস্ক গাজায় সেনা পাঠাতে প্রস্তুত। তবে গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে তুরস্ক-ইসরাইলের সম্পর্ক চরমভাবে খারাপ হওয়ায়, ইসরাইল তুর্কি বাহিনীর উপস্থিতি সহজে মেনে নেবে কি না, তা একটি বড় প্রশ্ন।

এছাড়াও, ট্রাম্প প্রশাসনের একজন সিনিয়র উপদেষ্টা নিশ্চিত করেছেন যে একাধিক 'আরব ও মুসলিম' দেশ এই মিশনে সেনা পাঠাতে গোপনভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার সরাসরি সেনা না পাঠিয়ে তহবিল সরবরাহ ও প্রশিক্ষণে সহায়তা করতে আগ্রহী বলে জানা গেছে। এই আর্থিক ও প্রশিক্ষণ সহায়তা গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।