দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শিক অবস্থান নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে জামায়াত ইসলামীর কঠোর সমালোচনা করেছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী কি বলছে আর কি করছে—এই দুইয়ের মধ্যে কোনো ধরনের মিল বা সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যায় না। এই দলটির রাজনীতি সবসময় দৃশ্যমান ও অদৃশ্য দ্বৈততার মধ্যে চলে।
একটি টেলিভিশন টক শোতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, এনসিপি, বিএনপি, এমনকি আওয়ামী লীগের মতো দলগুলোও তাদের আদর্শ ও কার্যক্রমের মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রাখে। কিন্তু জামায়াত ইসলামীর ক্ষেত্রে তাদের কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নেই, যা তাদের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
আলোচনার মোড় ঘুরে আসে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা’ প্রসঙ্গে। এনসিপিকে গণঅভ্যুত্থানের পর সৃষ্ট একটি নতুন দল উল্লেখ করে রুমিন ফারহানা বলেন, দলটির প্রতি মানুষের ভালোবাসা থাকলেও, শুধুমাত্র শাপলা প্রতীক নিয়েই দলটির এই অনড় অবস্থানে তিনি বিস্মিত।
বিএনপির এই নেত্রী স্পষ্ট করেন, কেবল প্রতীক পেলেই নির্বাচনে বেশি ভোট পাওয়া বা আসন জেতার সম্ভাবনা বাড়ে না। দীর্ঘমেয়াদী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দলের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসই একটি প্রতীককে ব্র্যান্ডে পরিণত করে।
তিনি যুক্তি দেন, বাংলাদেশে নৌকা ও ধানের শীষের মতো প্রতীকগুলো দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষের মননে গেঁথে গেছে। কিন্তু শাপলা, পদ্ম বা গোলাপের মতো নতুন প্রতীকগুলোর ক্ষেত্রে সেই ব্র্যান্ড তৈরি করতে একটি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। আপামর জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশের মনে আস্থা তৈরি হওয়া জরুরি, যা একদিনে সম্ভব নয়।
রুমিন ফারহানা এনসিপিকে সতর্ক করে বলেন, শাপলা প্রতীক না পেলে দলটি যে অবস্থান নিচ্ছে, তা এক অর্থে নির্বাচনে নিজেদের পরাজয় বরণ করে নেওয়ার শামিল। তাদের এই জেদাজেদি একটি নতুন দলের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। তিনি মনে করিয়ে দেন, এই পরাজয়টি বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া হবে না, বরং তারা নিজেরাই এই হার মেনে নিচ্ছেন বলে প্রতীয়মান হবে।
