বিশ্ব

ইরানি পরমাণু সক্ষমতা ধ্বংসের ট্রাম্পের দাবি, সামরিক প্রভাব নিয়ে পেন্টাগন-গোয়েন্দা দ্বিমত; আলোচনা বন্ধ

ইরানি পরমাণু সক্ষমতা ধ্বংসের ট্রাম্পের দাবি, সামরিক প্রভাব নিয়ে পেন্টাগন-গোয়েন্দা দ্বিমত; আলোচনা বন্ধ

ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবিকে সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন তেহরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে ‘অনুপযুক্ত, ভুল ও মোড়ল সুলভ’ আখ্যা দিয়ে খামেনি সোমবার তার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্পকে পরমাণু স্থাপনা ধ্বংসের মন্তব্য নিয়ে ‘স্বপ্ন দেখতে’ বলেছেন।

খামেনি আরও প্রশ্ন তোলেন, কোনো দেশের পারমাণবিক শিল্প নিয়ে কথা বলার অধিকার মার্কিন প্রেসিডেন্টের আছে কি না। তার এই প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট করে যে ট্রাম্প প্রশাসনের মোড়ল সুলভ আচরণ তেহরান মেনে নিতে প্রস্তুত নয়।

 

‘সবচেয়ে সুন্দর সামরিক অভিযান’

 

ইসরায়েল জুনের মাঝামাঝি সময়ে ইরানের ওপর এক নজিরবিহীন বোমা হামলা শুরু করে। অল্প সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রও এই হামলায় যোগ দিয়ে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানে।

গত সপ্তাহে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে ট্রাম্প জানান, এই হামলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ‘সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন’ করে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই হামলাগুলোকে ‘সবচেয়ে সুন্দর সামরিক অভিযান’ উল্লেখ করে দাবি করেন, এরপর ইরান ‘মধ্যপ্রাচ্যের আর মোড়ল হয়ে থাকেনি’।

 

সামরিক প্রভাবের দ্বন্দ্ব ও আলোচনার ভবিষ্যৎ

 

মার্কিন হামলার প্রকৃত প্রভাব নিয়ে খোদ ওয়াশিংটনেই দ্বিমত রয়েছে। পেন্টাগন দাবি করেছে, এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে এক থেকে দুই বছর পিছিয়ে দিয়েছে। তবে প্রাথমিক মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এর বিপরীত তথ্য দেওয়া হয়েছিল, যেখানে বলা হয় যে এই বিলম্ব মাত্র কয়েক মাসের। এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য হামলার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে।

ইসরায়েলের সঙ্গে জুনের এই যুদ্ধটি তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে পূর্বনির্ধারিত ষষ্ঠ দফা পারমাণবিক আলোচনার ঠিক দুই দিন আগে ঘটেছিল। সামরিক হামলার কারণে সেই থেকে পারমাণবিক আলোচনাগুলো ব্যাহত হয়েছে। ইরান স্পষ্ট জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হামলা না করার নিশ্চয়তা দিলেই কেবল তারা পুনরায় আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।

খামেনির তীব্র প্রতিক্রিয়া এবং ট্রাম্পের বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তব্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। পাশাপাশি, সামরিক হামলার প্রভাব নিয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষের মধ্যে থাকা এই মতবিরোধ পারমাণবিক আলোচনার ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে।