জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং নির্বাচনী সংস্কারসহ ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া দলগুলো। জামায়াতের নেতারা সরকারকে তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ব্যর্থতার জন্য কঠোর সমালোচনা করেছেন।
সোমবার মহাখালীতে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াত আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, 'দেশের মানুষ ফ্যাসিস্ট সরকারের অত্যাচারে অনেক কষ্ট পেয়েছে। আল্লাহ তাদের বিদেশে পালাতে বাধ্য করেছে।' তিনি হুঁশিয়ারি দেন, আগুন-সন্ত্রাস করে যারা আবার ফিরে আসার চেষ্টা করছে, তাদের আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।
এই সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরে বলেন, সরকার জাতির সামনে দেওয়া তার ওয়াদা—অর্থাৎ সব গণহত্যার বিচার এবং রাষ্ট্রের সংস্কার শেষে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া—কোনোটিই এখনো বাস্তবায়ন করতে পারেনি। বরং একটি বিশেষ দলের প্রতি আনুগত্যশীল হয়ে সরকার কেবল নির্বাচনের কথাই বলছে।
পাঁচ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতি নিয়ে গণভোট। অধ্যাপক মুজিবুর রহমান চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, পিআরের বিরোধিতাকারীদের সাহস থাকলে নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটের ব্যবস্থা করে প্রমাণ করতে হবে— দেশের জনগণ পিআরের পক্ষে আছে।
একই সাথে, রফিকুল ইসলাম খান সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে গণভোটের সময় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতায় কোনো দল সংঘর্ষে জড়ালে বা ভোট কারচুপি হলে গণভোটও বিতর্কিত হবে। তাই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের আগে নভেম্বরের মধ্যে গণভোট সম্পন্ন করার দাবি জানান তিনি।
এদিকে, একই দাবিতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের পূর্ব পাশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলের মহাসচিব ইউনুস আহমাদ বলেন, 'পুরোনো বন্দোবস্তের নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে আগের পরিস্থিতিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের জনতা প্রতিহত করবে।' তিনি জুলাইয়ের রক্তক্ষরণের পরে আর কোনো ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার সুযোগ দেওয়া হবে না বলে দৃঢ়তা প্রকাশ করেন।
রাজধানীর দুই প্রান্তে সমাবেশ ও মিছিলের মাধ্যমে গতকাল যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলো তাদের দাবিগুলো জোরালোভাবে তুলে ধরেছে। এই আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে ২৫ অক্টোবর সব বিভাগীয় শহরে এবং ২৭ অক্টোবর সব জেলা শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
