বিদেশি ঋণের বোঝা এবং দেশের অভ্যন্তরে দুর্নীতি ও লুটপাটের তীব্র সমালোচনা করে পরীক্ষিত দুর্নীতিবাজদের আবারও ক্ষমতায় না আসার কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম। সোমবার বিকালে নোয়াখালী জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এই ঘোষণা দেন।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, বিগত সরকারের আমলে জনগণ স্বাধীন দেশে থেকেও পরাধীন ছিল। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, তা বর্তমান বাস্তবতায় পূরণ হচ্ছে না। তিনি দাবি করেন, মাত্র ৩৫-৪০ শতাংশ ভোট পেয়ে যারা সরকার গঠন করেছিল, তারা সংবিধানকে নিজেদের খেলার মাঠে পরিণত করেছে, যা দেশের গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পরিপন্থী।
দুর্নীতি ও বৈদেশিক ঋণ: দেশের অগ্রগতি থমকে
ফয়জুল করীম জোর দিয়ে বলেন, "আগামীতে পরীক্ষিত দুর্নীতিবাজ, খুনি ও জুলুমবাজদের ক্ষমতায় নেওয়া যাবে না।" তিনি অভিযোগ করেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদেরকে দেশের মালিক এবং জনগণকে তাদের দাস মনে করত। তাদের অপশাসনের বিরুদ্ধে কথা বললেই খুন ও গুম করা হতো।
তিনি দেশের অর্থনৈতিক সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, সরকার জনগণকে উন্নয়নের মিথ্যা গল্প শুনিয়েছে। "অথচ দেশের কোনো ব্যাংকে টাকা নেই। সব টাকা তারা বিদেশে পাচার করে নিয়েছে। বৈদেশিক ঋণের চাপে দেশের অগ্রযাত্রা থমকে যাচ্ছে!"
রাষ্ট্র সংস্কারে জুলাই সনদের গুরুত্ব
ফয়জুল করীম রাষ্ট্র সংস্কারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে জোর দেন। তিনি বলেন, ৩১টি দল ঐক্যমত্য কমিশনে অংশগ্রহণ করেছে এবং তার মধ্যে ২৫টি দল পিআর পদ্ধতি (সংখ্যাপাতিক প্রতিনিধিত্ব)-এর পক্ষে মত দিয়েছে। তিনি দাবি করেন, ঐক্যমত হওয়া ৮৪টি বিষয়ে কোনো তালবাহানা না করে রাষ্ট্রের সংস্কার নিশ্চিত করতে অবিলম্বে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।
এই সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নোয়াখালী জেলা উত্তর এর সভাপতি মাও. নজীর আহমদ সভাপতিত্ব করেন এবং জেলা দক্ষিণ এর সভাপতি মাও. ইউসুফ ভূঁইয়া সমাবেশ উদ্বোধন করেন। জেলা সেক্রেটারি এইচ. এম কাউছার আহমাদ এর সঞ্চালনায় অন্যান্য জেলা ও থানা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
