জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুরহস্য অবশেষে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন মোড় নিয়েছে। দীর্ঘ ২৯ বছর পর আদালতের নির্দেশে এই ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (২১ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজধানীর রমনা থানায় এজাহারটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেছে পুলিশ, যা নিশ্চিত করেছেন রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. মাজহারুল ইসলাম। তিনি জানান, এজাহার মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মামলার এজাহারে সালমান শাহর সাবেক স্ত্রী সামিরা হক, চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডন, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও লতিফা হক লুসি-সহ মোট ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই ১১ জনের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনের নামও মামলার নথিভুক্ত হয়েছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই হাই-প্রোফাইল মামলাটির নতুন করে তদন্ত শুরু হবে।
এই নাটকীয় মোড় সম্ভব হয়েছে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর নিরলস আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর মরদেহ ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়ার পর থেকে এই ঘটনা দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে অপমৃত্যু হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনেও একে আত্মহত্যা বলে মত দিয়েছিল। তবে নীলা চৌধুরী শুরু থেকেই সেই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে আসছিলেন।
অবশেষে নীলা চৌধুরীর রিভিশন আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এই হত্যা মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের এই আদেশের পরই রমনা থানায় মামলা দায়ের করা হলো। দীর্ঘ ২৯ বছর পর মামলার এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ায় এর তদন্তের গতিপথ সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই তারকার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে এই আইনি পদক্ষেপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
