ডিসেম্বরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই পুরো দমে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সরাসরি প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এক আসনে একক প্রার্থীকে মাঠে নামার নির্দেশ দিচ্ছেন। দলের অভ্যন্তরীণ ভুল বোঝাবুঝি দূর করা এবং ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে পর্যাপ্ত সময় নিতেই এই প্রাক-নির্বাচনী তোড়জোড় বলে জানা গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ভুল বুঝাবুঝি পরিষ্কার করা এবং মাফিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের অপকর্ম জনগণের কাছে তুলে ধরার জন্য সময় প্রয়োজন। নির্বাচনী তফসিলে যে অল্প সময় পাওয়া যায়, তাতে বর্তমান সরকারের প্রকৃত চরিত্র উন্মোচন করা সম্ভব নয়, তাই তারা আগে থেকেই মাঠে নামতে চান। তিনি নিশ্চিত করেন, তারেক রহমান এই মুহূর্তে কেবল সেইসব প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, যাদের নির্বাচনী এলাকায় কোনো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই।
গুলশান অফিসে কয়েক সপ্তাহ ধরে দায়িত্বশীল নেতাদের বৈঠকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার পরই তারেক রহমানের সরাসরি যোগাযোগের এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বগুড়ার জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, যিনি তারেক রহমানের সরাসরি ফোন পেয়েছেন, তিনি এটিকে সবুজ সংকেত হিসেবে দেখছেন। তারেক রহমানের নির্দেশে কাজ শুরু করেছেন বগুড়া-১ আসনে কাজী রফিকুল ইসলাম, বগুড়া-৩-এ আবদুল মহিত তালুকদার, বগুড়া-৪ আসনে মোশারফ হোসেন, বগুড়া-৫-এ জি এম সিরাজ। এছাড়া, মেহেরপুর-১ ও মেহেরপুর-২ আসনের জন্য যথাক্রমে মাসুদ অরুণ ও আমজাদ হোসেনও একই নির্দেশনা পেয়েছেন।
আমজাদ হোসেনকে যেমন বলা হয়েছে, তার আসনে ধানের শীষকে তৈরি দিতে হবে এবং হাতে তুলে দিতে হবে। মাসুদ অরুণও জানান, জনগণের সঙ্গে থাকা ও তাদের সঙ্গে রাখার বিবেচনাবোধকে সামনে রেখে মাঠে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর আসনেও একই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঢাকা-১৬ আসনে আমিনুল হক, ঢাকা-৮-এ মির্জা আব্বাস, ঢাকা-৪-এ তানভীর আহমেদ রবিনের নাম রয়েছে তালিকায়। জোটমিত্রদের মধ্যে ববি হাজ্জাজকে ঢাকা-১৩ এবং আন্দালিব রহমান পার্থকে ঢাকা-১৭ আসনে বিবেচনা করা হচ্ছে। ঢাকা-১৪ আসনে রাখা হতে পারে নির্দলীয় প্রার্থী। ঢাকা মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক আমিনুল হক মৌখিক নির্দেশনা নিয়েই সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া শেষে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই বিএনপির তিনশ আসনের প্রাথমিকভাবে একক প্রার্থী চূড়ান্ত হবে। তবে জোটবদ্ধ রাজনৈতিক কৌশলের কারণে এবং মিত্রদের সঙ্গে চূড়ান্ত বোঝাপড়ার ভিত্তিতে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগে প্রায় ৫০টি আসনে পরিবর্তন আসবে বলে দলের পক্ষ থেকে আভাস দেওয়া হয়েছে। এই ঐক্যবদ্ধ কৌশলই ভোটের মাঠে বিএনপির মূল শক্তি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
