দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ভাগ্য নির্ধারণের ভার অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে তিনি মন্তব্য করেন, “আওয়ামী লীগের রাজনীতি সচল নাকি নিষিদ্ধ থাকবে, সেই সিদ্ধান্ত সরকার নেবে।” তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগের অপরাধীদের বিচার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
এই মন্তব্য এমন এক সময় এলো যখন গত রবিবার (১৯ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সহ ছয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখে আওয়ামী লীগের ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এই আন্তর্জাতিক আলোচনার মধ্যেই রিজভী দেশের অভ্যন্তরে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে মন্তব্য করলেন।
রিজভী বিশেষ করে তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সতর্কবার্তা দেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘সব পেয়ে গেছি’—এমনটা ভাবলে তা একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রসংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করলেই জাতীয় নির্বাচনে জেতা যাবে—এমন ধারণা পোষণ করাকে ভুল বলে অভিহিত করেন। তার এই বক্তব্য জামায়াতের সাম্প্রতিক ছাত্রসংসদ নির্বাচনে বিপুল জয়ের পরে দলটির অতি-আত্মবিশ্বাস নিয়ে একটি সুস্পষ্ট বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, গণভোটের বিষয়টি নিয়েও রিজভী তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি নভেম্বরের গণভোটের দাবিকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে ‘মামাবাড়ির আবদার’ হিসেবে উল্লেখ করেন। রিজভী যুক্তি দেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট অনুষ্ঠিত হলে ব্যয় এবং সময় উভয়ই সাশ্রয় হবে, যা একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি যেকোনো উসকানিতে উত্তেজিত না হয়ে সংযত থাকার আহ্বানও জানান তিনি।
