জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) এস. এন. মো. নজরুল ইসলাম মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, জুবায়েদকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে তারই প্রেমিকা বার্জিস শাবনাম বর্ষা। বর্ষার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে তাকে সহযোগিতা করেছে মাহির রহমান নামে এক যুবক।
পুলিশের তথ্যমতে, নিহত জুবায়েদ বর্ষার বাসায় গৃহশিক্ষকতার সুবাদে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। কিন্তু বর্ষার আগে থেকেই মাহির রহমানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। জুবায়েদের আগমনে সেই সম্পর্ক ভেঙে গেলেও পরবর্তীতে মাহিরের সঙ্গে বর্ষার পুনরায় যোগাযোগ শুরু হয়। এর ফলেই জুবায়েদের প্রতি বর্ষার মনে তীব্র ক্ষোভ ও বিদ্বেষের সৃষ্টি হয়।
এই ক্ষোভ থেকেই বর্ষা ও মাহির জুবায়েদকে হত্যার জন্য ২৩ দিন ধরে সুপরিকল্পিতভাবে প্রস্তুতি নেয়। প্রাথমিকভাবে মাহির এই হত্যায় রাজি না থাকলেও, বর্ষার চাপেই হত্যার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মাহির স্বীকার করেছেন, বর্ষাই শেষ পর্যন্ত ছুরি দিয়ে জুবায়েদকে কুপিয়ে হত্যা করেন। ঘটনার দিন, রোববার বিকেলে বর্ষার বাসার দিকে যাওয়ার পথে জুবায়েদের সঙ্গে মাহিরের বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয় এবং একপর্যায়ে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
নিহত জুবায়েদ হোসেন ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি হিসেবেও সক্রিয় ছিলেন। ময়নাতদন্ত শেষে তাকে গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় দাফন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বর্ষা ও মাহিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি শিক্ষার্থী সমাজকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে।
