সর্বশেষ

ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ: টঙ্গীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনি ও মৃতদেহের ওপর লবণ ছিটিয়ে উল্লাস

ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ: টঙ্গীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনি ও মৃতদেহের ওপর লবণ ছিটিয়ে উল্লাস

গাজীপুরের টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয় জনতা। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে সংঘটিত এই ঘটনাটি শুধু আইন হাতে তুলে নেওয়ার নজির নয়, বরং জনরোষের এক ভয়াবহ প্রকাশ। নিহত ওই যুবকের বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর এবং তার পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে বারোটার দিকে তিন যুবক যখন ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছিল, তখন এলাকাবাসী তাদের ধাওয়া করে। জনতার হাতে দু'জন ধরা পড়লেও একজন সটকে পড়ে। স্থানীয়রা আটক দুই যুবককে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়।

স্থানীয়দের বক্তব্যে উঠে এসেছে টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকার অপরাধচিত্র। তাদের ভাষ্য, এই এলাকায় প্রতিদিন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং বারবার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটার ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়, যা এই গণপিটুনির মতো চরম ও সহিংস উপায়ে বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।

ঘটনার সবচেয়ে অমানবিক অংশ ছিল, ছিনতাইকারী সন্দেহে নিহত যুবকের প্রতি জনতার আচরণ। গণপিটুনির পর উত্তেজিত জনতা ক্ষোভে ওই ব্যক্তির গায়ে লবণ ঢেলে উল্লাস করে। এই নৃশংসতা সমাজের নৈতিক অবক্ষয় এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার এক ভয়াবহ প্রবণতাকে ফুটিয়ে তুলেছে।

টঙ্গী পূর্ব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম পরে ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মো. ওয়াহিদুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, নিহত যুবকের নাম-পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশি তৎপরতা চলছে। একই সঙ্গে, আইন হাতে তুলে নেওয়া এবং গণপিটুনির এই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।