মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মুয়াজ্জিনকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা জয়নাল চৌধুরী। মুয়াজ্জিন আব্দুল লতিফকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে তিনি মঙ্গলবার সকালে শ্রীমঙ্গল থানা জামে মসজিদ কমিটি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। জয়নাল চৌধুরী শ্রীমঙ্গল পৌর বিএনপির আহ্বায়ক পদে আছেন।
সোমবার জোহর নামাজের পর মসজিদের পবিত্র প্রাঙ্গণে মুয়াজ্জিন আব্দুল লতিফের গায়ে হাত তোলেন জয়নাল চৌধুরী। এই অশালীন ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে শ্রীমঙ্গলের মুসল্লি, ইমাম সংগঠন এবং ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে নিন্দার ঝড় ওঠে। স্থানীয়ভাবে এই ঘটনাটিকে ধর্মীয় স্থানে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা হিসেবে দেখা হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে অভিযুক্ত জয়নাল চৌধুরী মঙ্গলবার বাদ জোহর নামাজের পর মুসল্লিদের সামনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। তবে এই ঘটনার গভীরতা এবং জনমনে সৃষ্ট তীব্র প্রতিক্রিয়ার কারণে মসজিদ কমিটি কোনো প্রকার নমনীয়তা দেখায়নি।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় শ্রীমঙ্গল থানা জামে মসজিদের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে মসজিদ কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান, উপদেষ্টা মো. ইয়াকুব আলী, সাবেক মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু এবং খতিব হাফেজ মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ নিজামীসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত নেতৃবৃন্দ সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, মুয়াজ্জিনের প্রতি এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নীতির পরিপন্থী।
জরুরি বৈঠক শেষে জয়নাল চৌধুরীকে মসজিদ কমিটি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সামাজিক মর্যাদা বা রাজনৈতিক পদ নির্বিশেষে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের প্রতি এমন অমানবিক আচরণ বরদাস্ত করা হবে না এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ও সামাজিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুসল্লিরা এই কঠোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ধর্মের স্থানে শান্তি বজায় রাখার জন্য মসজিদ কমিটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
