রাজনীতি

হত্যা মামলার আসামিকে বাঁচাতে ষড়যন্ত্র: আশুলিয়া থানা উত্তাল, সম্মিলিত আন্দোলনে নামার ঘোষণা বিভিন্ন দলের

হত্যা মামলার আসামিকে বাঁচাতে ষড়যন্ত্র: আশুলিয়া থানা উত্তাল, সম্মিলিত আন্দোলনে নামার ঘোষণা বিভিন্ন দলের

মুন্সিগঞ্জের আশুলিয়া থানা ফটক মঙ্গলবার বিকেলে এক নজিরবিহীন বিক্ষোভের সাক্ষী হলো, যার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী সিকদার ওরফে ‘কিলার শিকদার’। হত্যা, চাঁদাবাজি এবং ভূমি দখলসহ তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত নয়টি মামলার মধ্যে মাত্র একটিতে তাকে আদালতে পাঠানোর অভিযোগে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষুব্ধ সংগঠনগুলো এটিকে বিচারিক প্রক্রিয়া ভণ্ডুলের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে “জুলাই রেভ্যুলেশনারি এলায়েন্স”-এর ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে ঢাকা জেলা উত্তর শাখার আহ্বায়ক মুহাম্মদ মারুফ ইসলাম তামিম সভাপতিত্ব করেন এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ ওয়ালিদ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও যোগ দেন।

বিক্ষোভকারীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ করেন, আইয়ুব আলী সিকদার একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা হওয়ায় পুলিশ তাকে পরোক্ষভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করছে। মাত্র একটি চাঁদাবাজির মামলায় তাকে আদালতে প্রেরণ করা হলেও, তার বিরুদ্ধে থাকা হত্যা মামলা ও ভূমি দখলের মতো গুরুতর মামলাগুলোকে পুলিশ উপেক্ষা করেছে। তাদের দাবি, এটি ক্ষমতা ব্যবহার করে আইনি প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার একটি সুস্পষ্ট উদাহরণ।

বক্তব্য রাখেন নজরুল ইসলাম শুভ, রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ফয়সাল হোসেন ফাল্গুন এবং মুহাম্মদ আল কাফিসহ অন্যান্য নেতারা। তারা এই প্রভাবশালী আসামিকে রক্ষাকারী পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং আশুলিয়া থানার ওসিকে দ্রুত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

বক্তারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং আইয়ুব আলী সিকদারকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ঘোষণা করেন। অন্যথায়, বৃহত্তর পরিসরে আরও কঠোর আন্দোলন শুরুর হুঁশিয়ারি দেন তারা।

গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এই কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন আপ বাংলাদেশ, ছাত্রদল, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির শীর্ষ নেতারা। তারা ঘোষণা দিয়েছেন, যদি প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই দাবির প্রতি দ্রুত সাড়া না আসে, তবে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচিতে তারা সবাই জুলাই রেভ্যুলেশনারি এলায়েন্সের সঙ্গে একত্রিত হয়ে মাঠে নামবেন। এই সম্মিলিত আন্দোলনের ঘোষণা স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।