অন্যান্য

মানবতাবিরোধী বিচার: সেনা হেফাজতে থেকেও ট্রাইব্যুনালে হাজিরা না দিলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি

মানবতাবিরোধী বিচার: সেনা হেফাজতে থেকেও ট্রাইব্যুনালে হাজিরা না দিলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি

মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরা নিশ্চিত করতে আগামীকাল বুধবার দিন ধার্য রয়েছে। এই প্রসঙ্গে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, পরোয়ানা জারি হওয়া কর্মকর্তারা যদি আদালতে হাজির না হন, তবে আইন অনুযায়ী তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

প্রসিকিউটর তামিম নিশ্চিত করেন যে, গুমের দুটি মামলায় ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরোয়ানার কপি পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, এখন তাঁদের হয় আত্মসমর্পণ করতে হবে, না হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁদের গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসবে।

সেনা কর্মকর্তাদের সেনা হেফাজতে থাকার বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও প্রসিকিউটর তামিম জানান, প্রসিকিউশনের কাছে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য নেই। তাঁর ভাষ্যমতে, পরোয়ানা জারি এবং কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য পৌঁছানোর কাজটি ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার অফিস করেছে। প্রসিকিউশন রেজিস্ট্রার অফিসের মাধ্যমে নন-এক্সিকিউশন রিপোর্ট পেলে পরবর্তী ধাপ কী হবে, তা নির্ধারণ করবে। তিনি পুনরায় জোর দেন যে, এই আইনি প্রক্রিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রভাবিত হবে না।

তামিম আইনি প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে বলেন, সেনা কর্মকর্তারা যদি আদালতে হাজির হন, তবে জামিনের ভিত্তি থাকলে ট্রাইব্যুনাল তাঁদের জামিন দিতে পারেন অথবা কারাগারে পাঠাতে পারেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো, যদি তাঁরা নির্ধারিত দিনে হাজির না হন, তবে আইনি বিধান অনুযায়ী তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এর পরেও যদি তাঁরা আদালতে হাজির হতে ব্যর্থ হন, তবে তাঁদের পলাতক দেখিয়ে রাষ্ট্রীয় খরচে তাঁদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে মামলা পরিচালনা করতে পারবে—এটাই আইনের স্পষ্ট বিধান।

উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই ২৫ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে সেনা সদর জানায়, এই কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জন কর্মরত ও একজন এলপিআর-এ আছেন এবং মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ছাড়া বাকি ১৬ জন সেনা হেফাজতে রয়েছেন। সেনা হেফাজতে থাকা সত্ত্বেও তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজিরা নিশ্চিত করা না হলে আইন অনুযায়ী তাঁদের পলাতক দেখানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা এই উচ্চ-প্রোফাইল মামলার একটি নতুন আইনি দিক উন্মোচন করবে।