জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি বড় ধরনের আদর্শিক শুদ্ধি অভিযানের পথে হাঁটছে। ডাকসু নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না পাওয়ার পর সংগঠনটি বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়ে 'ছাত্রশক্তি' নামে নতুন করে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় সমন্বয় সভার মাধ্যমে এই পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।
সংগঠনের শীর্ষ নেতারা অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা নষ্ট হওয়ার পেছনে ছাত্রশিবির সংশ্লিষ্টদের অনুপ্রবেশ এবং স্যাবোটাজকে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এই সমস্যা মোকাবিলায় নতুন নেতৃত্ব গঠনের ক্ষেত্রে কড়া যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাগছাস আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার স্পষ্ট জানিয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে ভিন্ন আদর্শ বা অন্য সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলবে, তাদের নতুন কমিটিতে রাখা হবে না। তিনি বলেন, তারা শুধুমাত্র আদর্শিক ও বাংলাদেশ পন্থার রাজনীতি করতে আগ্রহী।
নতুন সংগঠনের নাম হিসেবে 'জাতীয় ছাত্রশক্তি' নামটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে। নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি সর্বোচ্চ ১০১ সদস্যবিশিষ্ট হতে পারে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সমন্বিত ‘সুপার ফোর’ কাঠামোতে পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।
শীর্ষ নেতৃত্বে আলোচনায় থাকা বর্তমান আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও সদস্য সচিব জাহিদ আহসানসহ বেশ কয়েকজন তরুণ নেতা রয়েছেন। ঢাবি শাখার সম্ভাব্য নেতৃত্বে আলোচিত হচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ সহ অন্যান্য তরুণ সংগঠকরা।
উল্লেখ্য, এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছিল 'গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি' নামে, যারা সরকারের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু কমিটি স্থগিত ও পরবর্তীতে বাগছাস গঠনের পরও কাঙ্ক্ষিত ফল না আসায় এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এনসিপির অন্যান্য অঙ্গসংগঠন—জাতীয় যুব শক্তি ও জাতীয় শ্রমিক শক্তি—আত্মপ্রকাশ করায়, ধারণা করা হচ্ছে, ছাত্র উইং হিসেবে ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ নামে আত্মপ্রকাশ করবে তারা। এর মাধ্যমে তারা ওয়েলফেয়ার পলিটিকস নয়, বরং ছাত্রসমাজকেন্দ্রিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আগামীতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভালো ফল করতে চায়।
