বিশ্ব

নতুন প্রেসিডেন্টের আমলে প্রথম পরীক্ষা: কিমের কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ

নতুন প্রেসিডেন্টের আমলে প্রথম পরীক্ষা: কিমের কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ

উত্তর কোরিয়া তাদের পূর্ব উপকূলের জলসীমায় একাধিক স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। আজ বুধবার সকালে ছোড়া এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো বিগত কয়েক মাসের মধ্যে প্রথম নিক্ষেপ। এটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রথম কোনো সামরিক পরীক্ষা করল পিয়ংইয়ং।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর দেওয়া তথ্যানুসারে, শনাক্ত হওয়া বস্তুগুলো স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং এগুলো পূর্ব সাগর (জাপান সাগর) অভিমুখে নিক্ষেপ করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার (২১৭ মাইল) পথ অতিক্রম করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ বাহিনী কমান্ড অতিরিক্ত নিক্ষেপের সম্ভাবনা মাথায় রেখে নজরদারি বাড়িয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে তথ্য আদানপ্রদান করছে। সেনাবাহিনী যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানানো হয়।

এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এক সপ্তাহ পরই দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়োংজু শহরে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন (এপেক) সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন যে, এপেক সম্মেলনের আগে বা চলাকালীন সময়ে উত্তর কোরিয়া নিজেদের পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের প্রচেষ্টা জোরদার করতে উসকানিমূলক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে পিয়ংইয়ংয়ে অনুষ্ঠিত বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন দেশটির নতুন দীর্ঘ-পাল্লার ‘হোয়াসং-২০’ আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেছিলেন। এই ক্ষেপণাস্ত্রকে উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র বলা হচ্ছে। ওয়ার্কার্স পার্টির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ওই প্যারেডে কিম জং উনের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক কূটনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি এবং পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম উন্নত অস্ত্র তৈরির ধারাবাহিক প্রচেষ্টা স্পষ্ট হয়। পিয়ংইয়ংয়ের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এসব অস্ত্র তৈরি জরুরি।

এই সামরিক পদক্ষেপ এমন সময় এল, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছর কিম জং উনের সঙ্গে দেখা করার আশা করছেন। তবে, উত্তর কোরিয়ার শর্ত স্পষ্ট—কিম জং উন ভবিষ্যতে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহী হলেও পিয়ংইয়ং কখনোই তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে না। কিমের এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ নতুন দক্ষিণ কোরীয় প্রশাসনের সামনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল।