জাতীয়

গুমের অভিযোগে অভিযুক্তরা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন: ডিভিশন পেতে পারে, বিশেষ জেল নয়

গুমের অভিযোগে অভিযুক্তরা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন: ডিভিশন পেতে পারে, বিশেষ জেল নয়

আওয়ামী লীগের বিগত সাড়ে ১৫ বছরের বিভিন্ন সময় গুমের শিকার ভুক্তভোগীরা মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি বৈষম্যহীন ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। তারা স্পষ্ট করেছেন, আইনগতভাবে অভিযুক্তরা কারাগারে ডিভিশন পাওয়ার অধিকারী হলেও, সাব-জেলের নামে কোনো বিশেষ সুবিধা দেওয়া যাবে না। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত অফিসারদের হাজিরার পর সাংবাদিকদের কাছে এই দাবি জানান গুমের শিকার ব্যক্তিরা।

এ সময় গুমের শিকার হওয়া সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আব্দুল্লাহ হিল আমান আল আযমী এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘ ৮ বছর 'আয়না ঘর'-এ গুমের শিকার হওয়া আল আযমী বলেন, অভিযুক্ত এ সব সেনা কর্মকর্তা তাদের সামরিক বাহিনীর দায়িত্বের বাইরে গিয়ে মূলত র‌্যাবে কর্মরত থাকার সময় এসব অপরাধে জড়িয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অপরাধী সেনা কর্মকর্তার সংখ্যা খুবই নগণ্য—মোট বাহিনীর এক শতাংশও নয়। ফলে, তাদের অপকর্মের জন্য পুরো সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে নিন্দা করা কোনোভাবেই সমীচীন হবে না। তিনি দৃঢ়ভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান এই দাবিকে সমর্থন করে বলেন, আসামিদের বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের বৈষম্য করা ঠিক হবে না। অভিযুক্তদেরও অন্য আসামিদের মতোই সাধারণ জেলে রাখতে হবে, যেমনটা রাখা হচ্ছে গ্রেফতারকৃত সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। হাসিনুর রহমান উল্লেখ করেন, যদি আইনগত ভিত্তি থাকে, তবে তাদের ডিভিশন দেওয়া যেতে পারে। তবে অন্য আসামিদের চেয়ে তাদের জন্য কোনো বিশেষ সুবিধা বা সাব-জেলের ব্যবস্থা করা উচিত নয়, কারণ এতে ন্যায়বিচারের লঙ্ঘন হবে।

গুমের শিকার এই ভুক্তভোগীরা মনে করেন, সামরিক কর্মকর্তাদের দ্বারা সংঘটিত এই ধরনের গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে যদি আদালত বৈষম্যমূলক আচরণ করে, তবে তা সমাজে আইনের শাসনের প্রতি আস্থা কমিয়ে দেবে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির পাশাপাশি কারাবাসের ক্ষেত্রেও সাধারণ আইনি বিধি অনুসরণ করা আবশ্যক।