পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে শহীদ জুলাই যোদ্ধার কন্যা কলেজছাত্রী দলবদ্ধ ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় তিন অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিকে কঠোর শাস্তি দিয়েছে আদালত। পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নীলুফার শিরিন আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) এই আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালত প্রাঙ্গণে সকাল থেকেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয় এবং মামলার রায় শুনতে উৎসুক জনতা ভিড় করে।
দণ্ডিত তিন আসামির নাম হলো— ইমরান মুন্সী, সাকিব মুন্সী এবং সিফাত মুন্সী। যেহেতু তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক, আদালত তাদের শিশু আইনের অধীনে বিচার করেছেন। রায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩) ধারায় প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সাকিব মুন্সী ও সিফাত মুন্সীকে অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় পর্নোগ্রাফি আইনের ৮(২) ধারায় অতিরিক্ত ৩ বছর করে কারাদণ্ড অর্থাৎ মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারক উল্লেখ করেন, কারাদণ্ডের সাজাগুলো একের পর এক কার্যকর হবে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় শহীদ জুলাই যোদ্ধার কন্যা কলেজছাত্রী বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়িতে যাওয়ার পথে আসামিরা তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে। পরে তারা একটি পরিত্যক্ত বাড়ির জঙ্গলে নিয়ে ওই কলেজছাত্রীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে এবং অপরাধের প্রমাণ হিসেবে পুরো ঘটনাটি মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে।
এই ন্যক্কারজনক ঘটনার পরে অপমান সইতে না পেরে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী ঢাকায় তার মায়ের বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন, যা জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের করা মামলার তদন্তভার পান দুমকি থানার ইনচার্জ তদন্ত মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি তদন্ত শেষে তিন আসামির সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করে ১ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া এবং অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমানের রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনায়, আদালত ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ এই রায় দেন। রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের পিপি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
