কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) জনসভায় দলটির মহাসচিব আহসান হাবিব (লিংকন) কর্তৃক কেন্দ্রীয় বিএনপির নেত্রী ফরিদা ইয়াসমিনকে অশালীন ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ ও গালিগালাজের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভেড়ামারা শহরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতার সৃষ্টি হয়েছে। আহসান হাবিবের বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয় বিএনপি কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়।
মঙ্গলবার বিকেলে আমলা ইউনিয়নের আমলা বাজারে জাতীয় পার্টির জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আহসান হাবিব। সেখানে তিনি বিএনপি নেত্রী ফরিদা ইয়াসমিনের নাম ধরে কটাক্ষ করেন এবং ভোট বিক্রি সংক্রান্ত অভিযোগের জবাবে ফরিদা ইয়াসমিনকে উদ্দেশ্য করে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেন। তিনি বলেছিলেন, "আমি যদি ভোট বিক্রি করে দিই, তাহলে সর্বোচ্চ ভোট পেলাম কীভাবে?"
এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফরিদা ইয়াসমিন। তিনি এটিকে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত চরম বেয়াদবি বলে আখ্যা দেন এবং জেলা বিএনপির কাছে ওই বক্তব্যের ভিডিও পাঠিয়ে আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
অশালীন সম্বোধনের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে ফরিদা ইয়াসমিনের সমর্থকেরা ভেড়ামারা শহরে মোটরসাইকেল নিয়ে ঝাড়ুমিছিল করেছেন। তারা আহসান হাবিবের অফিস ও বাড়ির সামনে গিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এই প্রতিবাদের জেরেই ভেড়ামারা শহরের চেয়ারম্যান মোড়ে (ক্লীক মোড়) জাতীয় পার্টির অফিসে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য রাতেই আহসান হাবিবের বাড়ির সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
এদিকে, এই ঘটনার পর চাপের মুখে বুধবার বেলা ১১টার দিকে ভেড়ামারা জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে আহসান হাবীব লিংকন তার বক্তব্যের জেরে দুঃখ প্রকাশ করে ভুল স্বীকার ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি তার বক্তব্যের জন্য মন মানসিকতা ঠিক না থাকার কারণ উল্লেখ করেন।
দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনে ফরিদা ইয়াসমিন (বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা নেতা) এবং আহসান হাবিব (জাপার সাবেক সাংসদ ও বর্তমান জোটের মনোনয়নপ্রত্যাশী) উভয়েই মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাদের দুজনের বাড়ি ভেড়ামারা উপজেলায় হওয়ায় রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে ব্যক্তিগত আক্রমণের এই ঘটনা জেলার রাজনীতিতে আরও বিভাজন সৃষ্টি করেছে।
