ইরাক ও ইরানের মধ্যেকার কৌশলগত নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমন্বয়কে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সোমবার তেহরানে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইরাক সরকার দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছে যে, তারা কোনোভাবেই তাদের ভূখণ্ড বা আকাশসীমা ব্যবহার করে ইরান বা অন্য কোনো প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে হুমকি প্রদানের সুযোগ দেবে না। ইরাকের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা কাসিম আল-আরাজি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই অবস্থানের কথা নিশ্চিত করেন।
আল-আরাজি জানান, বাগদাদ তেহরানের সঙ্গে আগস্ট মাসে স্বাক্ষরিত নিরাপত্তা চুক্তি প্রতিপালনে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে। এই সমঝোতা স্মারকের লক্ষ্য হলো সীমান্তে নিরাপত্তা সমন্বয় বৃদ্ধি করা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা দৃঢ় করা। তিনি বলেন, ইরাকি সরকার এমন কোনো উত্তেজনা বা সংঘাত প্রতিহত করতে কাজ করছে যা আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
এই বৈঠকের আলোচনায় উঠে আসে ইসরায়েল সংক্রান্ত সংবেদনশীল বিষয়টি। আরাজি উল্লেখ করেন, ইসরায়েল গত ১৩ জুন তেহরানের ওপর সামরিক, নৌ, পারমাণবিক এবং নাগরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পর ইরাক জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেশটির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করেছে। এই হামলায় ইরাকের আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইরাকের এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে দেশটির কঠোর অবস্থানকে তুলে ধরে।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি ইতোমধ্যে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন যে, "ইরানের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর জন্য ইরাকের আকাশসীমা ব্যবহার করা যাবে না।"
অন্যদিকে, ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সচিব আলি লারিজানী বলেন, তার এবং ইরাকের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার আলোচনার মূল বিষয় ছিল দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ। তিনি জোর দেন যে, তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে হলে নিরাপত্তা সহযোগিতা দৃঢ় করা অপরিহার্য। দুই দেশের এই আলোচনায় কৌশলগত নিরাপত্তা এবং পারস্পরিক অর্থনৈতিক স্বার্থকে উচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা বৃহত্তর আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
