আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে অবস্থিত নিজেদের কারিগরি মিশনকে পূর্ণাঙ্গ দূতাবাসের মর্যাদায় ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। ২০২১ সালে তালেবান সরকার গঠন করার পর বন্ধ থাকা এই দূতাবাস চার বছর পর আবার সচল হওয়ার এই সিদ্ধান্ত ভারত-আফগান সম্পর্কের একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই পদক্ষেপকে আফগান ভূ-রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরের সময় উভয় পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার ভারতের দৃঢ় সংকল্প স্পষ্ট হয়েছে।
সরকারি সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, ভারত এই দূতাবাস পরিচালনার জন্য শিগগিরই একজন চার্জ ডি’ অ্যাফেয়ার্স (CDA) নিয়োগ করবে, যিনি রাষ্ট্রদূত নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। এই কূটনৈতিক পদক্ষেপটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ রাশিয়া, চীন, ইরানসহ অনেক দেশ তালেবান প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কেবল রাশিয়াই আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবানকে আফগানিস্তানের শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ভারতও শিগগিরই একজন পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রদূত পাঠাতে পারে বলে জানা গেছে।
ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে যখন ডুরান্ড লাইন ইস্যুতে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্কে তীব্র উত্তেজনা চলছিল, ঠিক তার পরেই এই মিশন আপগ্রেডের সিদ্ধান্ত আসে। ১০ অক্টোবর হায়দ্রাবাদ হাউসে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে তালেবান মন্ত্রী মুত্তাকির সাক্ষাতের পরপরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই বৈঠকের পর, কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিও ঘোষণা করা হয়েছিল।
২০২১ সালের আগস্টে তালেবানরা ক্ষমতা দখলের পরপরই ভারত কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দেয় এবং সব কর্মীকে প্রত্যাহার করে নেয়। কেবল কাবুলেই নয়, ২০২১ সালের প্রথম দিকে সংঘাত তীব্রতর হওয়ায় মাজার-ই-শরিফ, জালালাবাদ, কান্দাহার এবং হেরাতের ভারতীয় কনস্যুলেটগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে, ২৩ জুন, ২০২২ তারিখে ভারত মানবিক সহায়তা এবং কনস্যুলার সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্য নিয়ে কাবুলে একটি প্রযুক্তিগত দল পাঠিয়েছিল, যা এখন পূর্ণাঙ্গ দূতাবাসের মর্যাদা পেল।
