ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থ জোগানো বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকওয়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। হোয়াইট হাউসে ফেরার পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে এটিই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম কঠোর পদক্ষেপ। মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে জানান, প্রেসিডেন্ট পুতিন যুদ্ধ থামাতে অস্বীকৃতি জানানোয় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং এটি রাশিয়ার তেল বিক্রির আয় বন্ধ করার সবচেয়ে সরাসরি উপায়।
এই পদক্ষেপটি আন্তর্জাতিক মিত্রদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ। যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে রসনেফট ও লুকওয়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কেবলমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রসনেফটের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, লুকওয়েলকে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার কারণে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড ফিশম্যান এই নিষেধাজ্ঞাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন। তার মতে, রসনেফট ছিল রাশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানি, যেটি এখনো পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার বাইরে ছিল। এই সিদ্ধান্তের ফলে স্বল্পমেয়াদে অনেক প্রতিষ্ঠান রুশ তেল কেনা থেকে বিরত থাকতে পারে, যা ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের জন্য বড় সাফল্য।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি ইউক্রেন কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিলে শান্তি আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যা পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি করে। তবে এই কঠোর নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করল। একই সঙ্গে তিনি ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকে পুতিনের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেছেন বলেও জানান।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়ন নিশ্চিত করেছেন, ইইউর ১৯তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজও শিগগির গৃহীত হবে। এই প্যাকেজ আরও কঠোর হবে। এতে রাশিয়ার তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি নিষিদ্ধ করা, ‘শ্যাডো ফ্লিট’ তেলবাহী জাহাজ কালো তালিকাভুক্ত করা, রসনেফট ও গ্যাজপ্রম নেফটের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ করা এবং নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যাওয়া ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে রুশ কূটনীতিকদের শেনজেন এলাকায় অবাধ চলাচলেও বিধিনিষেধ দেওয়া হবে।
