বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম মনে করেন, দেশ এখন ভঙ্গুর অবস্থায় আছে এবং জামায়াতে ইসলামীর পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি কেবলই নির্বাচন বিলম্বিত করার একটি কৌশল। তার মতে, জামায়াত এই দাবি এনেছে কারণ তারা দেখছে বিএনপি নির্বাচন চাইছে এবং বিএনপিকে কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বিএনপি কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করলেও তখন জামায়াত বা অন্য কেউ পিআর পদ্ধতির কথা তোলেনি।
আবদুস সালাম বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে এবং এর ফলে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার হারাবে—কারণ তখন কেবল দল দেখে ভোট দিতে হবে। তার মতে, সব তো জনগণের ওপর ছেড়ে দিতে হবে, প্রতিনিধি ঠিক করা থেকে বঞ্চিত করা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক উপায় হতে পারে না। এই মুহূর্তে দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো কাজ না করায়, ভঙ্গুর অবস্থা থেকে দেশকে বের করে আনতে একটি শক্তিশালী সরকার প্রয়োজন।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা কঠোর ভাষায় অভিযোগ করে বলেন, জামায়াত বিএনপির কাঁধে ভর করে এ পর্যন্ত এসেছে এবং এখন তারা বিএনপির ক্ষতি করার জন্য যা যা করা দরকার, তা-ই করছে। তিনি বিশ্বাস করেন, জামায়াত কোথা থেকে এই কাজগুলো করছে, সেটা দেশবাসী বুঝতে পেরেছে। তিনি স্পষ্ট করেন, বিএনপি কোনো ক্রাইসিসকে ভয় পায় না এবং মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত।
তিনি নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার আরেকটি ভয়াবহ পরিণতির দিকে আলোকপাত করেন। আবদুস সালাম মনে করেন, নির্বাচন দেরিতে হওয়ায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার সময় পেয়েছে, যা আগে নির্বাচন চাইলে হতো না। তিনি বলেন, "পরাজিত ফ্যাসিবাদ আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পেয়ে গেছে।" তার মতে, এই সময়টা দেওয়ার কারণেই এখন দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে এবং কথা নেই, বার্তা নেই বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বলছে।
আবদুস সালাম তার দলের শক্তিমত্তা তুলে ধরে বলেন, বিএনপির একটা অতীত আছে, যা দেশের স্বাধীনতা ও পুনর্গঠনের সঙ্গে জড়িত। এই কারণে দেশের মানুষের যে আস্থা, তা সহজে সরানো যাবে না। তিনি বলেন, গুম, হত্যা ও জেল-জুলুমের মাধ্যমেও বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভয় দেখানো যায়নি; বরং দীর্ঘ ১৭ বছরে তারা খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছেন।
