ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি এবং ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনাকে এক নতুন সামরিক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। প্রেসিডেন্ট মাদুরো দাবি করেছেন, তার দেশের হাতে রাশিয়া নির্মিত অন্তত পাঁচ হাজার বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা দেশের সামরিক প্রস্তুতিকে শক্তিশালী করেছে। বুধবার সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন।
মাদুরো বিশেষভাবে রুশ ইগলা-এস ক্ষেপণাস্ত্রের শক্তির কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, এই স্বল্প-পাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো আমেরিকান স্টিংগারসের মতোই কার্যকর এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, হেলিকপ্টারসহ নিচু উচ্চতার বিমান ভূপাতিত করতে সক্ষম। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই হালকা, একক সৈন্য-পরিচালিত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো দেশের প্রতিরক্ষার জন্য ‘শেষ পর্বত, শেষ শহর ও শেষ গ্রাম পর্যন্ত’ মোতায়েন করা হয়েছে।
এই সামরিক ঘোষণা আসে এমন এক সময়ে যখন যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে ৪ হাজার ৫০০ মেরিন ও নৌসদস্য মোতায়েন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এটিকে মাদকবিরোধী অভিযান ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা জোরদারের প্রচেষ্টা বলা হলেও, সম্প্রতি ক্যারিবীয় উপকূলের কাছে বেশ কয়েকটি নৌকা লক্ষ্য করে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক দাবি—তিনি ভেনেজুয়েলায় গোপন সামরিক অভিযানের জন্য সিআইএকে অনুমোদন দিয়েছিলেন—এই উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উভয় দল—রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সদস্যরাও—‘নারকো বোট’ হামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মার্কিন কর্মকর্তাদের বিবৃতি অনুযায়ী, মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে সামরিক পদক্ষেপের বিষয়টি ওয়াশিংটন গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। মাদুরোর ৫ হাজার রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের ঘোষণা তাই যুক্তরাষ্ট্রের এই চাপের বিরুদ্ধে একটি সরাসরি প্রতিরক্ষামূলক চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছে আন্তর্জাতিক মহল।
