উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন তার দেশ এবং রাশিয়ার সামরিক জোটকে 'অবিরামভাবে এগিয়ে' নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানায়, কিম এই ঘোষণা দেন উত্তর কোরীয় সৈন্যদের সম্মানে নির্মিতব্য এক স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে, যারা রুশ বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে। কিম স্পষ্ট করেন, আধিপত্য ও নির্যাতনের চ্যালেঞ্জ তাদের এই কৌশলগত সম্পর্ককে কোনোভাবেই বাধা দিতে পারবে না।
উত্তর কোরিয়ার এই সৈন্যদের প্রতি কিমের প্রকাশ্য শ্রদ্ধা নিবেদন আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। এর আগে কিম জং উন ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন, যা এই সামরিক সহযোগিতার ভিত্তি তৈরি করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে সমর্থনের অংশ হিসেবে বিপুল সংখ্যক সেনা, গোলাবারুদ ও ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে। ইউক্রেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা তথ্যের অনুমান অনুযায়ী, রাশিয়াকে সাহায্য করার জন্য উত্তর কোরিয়া ১০ হাজারের বেশি সৈন্য পাঠিয়েছে। এই সামরিক সহায়তার বিনিময়ে উত্তর কোরিয়া রাশিয়া থেকে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও সামরিক প্রযুক্তিগত সহায়তা লাভ করছে।
তবে এই সামরিক বিনিময়ের একটি অন্ধকার দিকও উঠে এসেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার উত্তর কোরীয় সেনা ইউক্রেনীয় যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হয়েছে। এত বিপুল সংখ্যক সৈন্য হারানো সত্ত্বেও কিম জং উনের এই দৃঢ় অঙ্গীকার প্রমাণ করে যে, কৌশলগতভাবে এই সম্পর্ক পিয়ংইয়ংয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, রাশিয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করে দৃঢ় অবস্থান বজায় রেখেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধে চাপ দিতে সম্প্রতি রাশিয়ার দুটি বৃহত্তম তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। কিমের এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন দুই দেশই পশ্চিমা চাপ মোকাবিলা করে তাদের সামরিক জোটকে আরও মজবুত করতে চাইছে। কিম ও পুতিনের এই সামরিক বোঝাপড়া বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে এক নতুন এবং জটিল সমীকরণের সৃষ্টি করছে।
