জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে এবং পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের রামপুরা থানা শাখা আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাসুম। এই সমাবেশ থেকে তিনি নির্বাচনের পদ্ধতি, গণভোটের সময়সীমা এবং ক্ষমতায় গেলে নারী অধিকার ও আইন সংস্কারের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দেন।
এ টি এম মাসুম বলেন, জুলাই সনদ কেবল স্বাক্ষরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না, বরং নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টাকেই আদেশ জারি করতে হবে। তিনি প্রেসিডেন্টের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার আদেশ জারির দাবি জানান, কারণ তার মতে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট পূর্ববর্তী সরকারের নিয়োগ করা।
গণভোটের প্রক্রিয়া নিয়ে জামায়াত নেতার কঠোর আপত্তি রয়েছে। তিনি বলেন, একটি বড় দল একসঙ্গে নির্বাচনের দিনেই গণভোট ও নির্বাচন করতে চায়, যা বাস্তবসম্মত নয়। তিনি যুক্তি দেখান যে, জাতীয় নির্বাচন শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। একই দিনে গণভোট হলে প্রার্থীরা নিজেদের জয় নিশ্চিত করার দিকেই মনোযোগ দেবেন, ফলে গণভোটের ফলাফল জনগণের প্রকৃত চাওয়া-পাওয়াকে প্রতিফলিত করবে না। তাই জামায়াত নভেম্বরের মধ্যে গণভোট সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে।
নারী অধিকার প্রসঙ্গে মাসুম বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের মর্যাদার সর্বোচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করবে এবং শালীনতা বজায় রেখে তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে। তিনি আধুনিক সভ্যতার সমালোচনা করে বলেন, ইসলাম নারীদের নারী রেখে যে সম্মানজনক স্বাধীনতা দিয়েছে, জামায়াত সেই মূল্যবোধে বিশ্বাসী। এছাড়াও, তিনি স্পষ্ট করে বলেন, জামায়াত ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশে বসবাসকারী অমুসলিমদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করবে।
আইন সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ এখনো ব্রিটিশ আমলের পুরোনো আইনের ভিত্তিতে চলছে। জামায়াত ক্ষমতায় এলে রাষ্ট্র, সংবিধান এবং বিভিন্ন আইনকানুনকে একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী করে নতুনভাবে রচনা করবে এবং সেভাবে ভূমিকা পালন করবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের রামপুরা থানা উত্তরের আমির ফজলে আহমেদ ফজলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান এবং সহকারী সেক্রেটারি মো. নাজিম উদ্দিন মোল্লা।
