রাজনীতি

এনসিপি’র কৌশলগত ঝুঁকি: প্রতীক না পেলে দুর্বল হবে রাজনৈতিক বার্তা, বলছেন বিশ্লেষক

এনসিপি’র কৌশলগত ঝুঁকি: প্রতীক না পেলে দুর্বল হবে রাজনৈতিক বার্তা, বলছেন বিশ্লেষক

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জিল্লুর রহমান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতীক নিয়ে নেওয়া কৌশলগত অবস্থানে সম্ভাব্য ঝুঁকি দেখছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, এনসিপি'র এই 'শাপলা পেলে নির্বাচন, না পেলে নয়'—দাবিটি এক ধরনের 'চাপ সৃষ্টির রাজনীতি'। এই কৌশলের মাধ্যমে তারা একদিকে যেমন নিজেদের পরিচিতি বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে তেমনই নির্বাচনী পরিবেশকে পক্ষপাত, বদলি-পদায়ন এবং ইসির নিরপেক্ষতার মতো প্রধান ইস্যুগুলোতে নিয়ে আসতে চাইছে।

জিল্লুর রহমান মনে করেন, প্রতীক না হলে অন্য প্রতীক বা জোটের প্রতীকে না যাওয়ার যে অবস্থান এনসিপি নিয়েছে, তা তাদের আলাদা 'ব্র্যান্ডিং'কে দৃঢ় করছে এবং একইসঙ্গে ভবিষ্যৎ জোট রাজনীতির দরজাও খোলা রাখছে। এই অবস্থান তাদের তরুণ সমর্থকদের কাছে নীতি ও আদর্শের প্রতি নিষ্ঠার সংকেত দেবে বলে এনসিপি সম্ভবত হিসাব করছে।

তবে, এই কৌশলগত সিদ্ধান্তের বেশ কিছু বড় ঝুঁকিও রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রথমত, প্রতীকের প্রশ্নে যদি দীর্ঘ অচলাবস্থা তৈরি হয়, তাহলে দলের সাংগঠনিক প্রস্তুতি মন্থর হয়ে যাবে। দ্বিতীয়ত, নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসবে, প্রতীকের এই অনিশ্চয়তা প্রার্থীদের মাঠপর্যায়ের প্রচারণা, ছাপা সামগ্রী এবং ভোটারদের মনে প্রতীককে চেনা—সবকিছুকেই মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে।

তৃতীয়ত, জিল্লুর রহমান হুঁশিয়ারি দেন যে, এনসিপি যদি নির্বাচন কমিশনকে অবৈধ বলতে বলতে শেষ মুহূর্তে সমঝোতায় যেতে বাধ্য হয়, তবে তাদের রাজনৈতিক বার্তার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং ধার মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে।

এদিকে, নির্বাচন কমিশনের অবস্থানেও একটি নীতিগত ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। নৌকা স্থগিত হওয়া এবং শাপলা তালিকায় না থাকার মতো সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলো একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করছে। বিশ্লেষকের মতে, জাতীয় প্রতীকের কেন্দ্রীয় উপাদানকে ভোটের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার না করার এই নীতি শুধু শাপলার ক্ষেত্রেই নয়, ভবিষ্যতে অন্যান্য রাষ্ট্রীয় চিহ্নের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে।