রাজনীতি

শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ও দুর্নীতির জাড় উপড়ে ফেলার ঘোষণা জামায়াত আমিরের

শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ও দুর্নীতির জাড় উপড়ে ফেলার ঘোষণা জামায়াত আমিরের

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান নিউইয়র্কের বাফেলোতে ঘোষণা করেছেন, দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে তারা কয়েকটি মূল বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবেন। তাঁর বক্তব্যের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল প্রবাসীদের অধিকার, শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান। স্থানীয় সময় শুক্রবার 'বাংলাদেশ আমেরিকান কমিউনিটি, বাফেলো' আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, ক্ষমতায় গেলে জাতীয় সংসদে প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে। এর মাধ্যমে প্রবাসীরা নিজেদেরকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে অনুভব করতে পারবেন। তিনি বিশ্বের সকল মানুষকে একটি কেন্দ্রবিন্দুতে এনে মজবুত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখান।

ডা. শফিকুর রহমান দেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকে 'ভাঙাচোরা, বিধ্বস্ত ও অপ্রয়োজনীয়' উল্লেখ করে তার আমূল পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। তিনি এমন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চান, যা শিক্ষার্থীদের দেশ গড়ার কারিগর বানাবে এবং সার্টিফিকেট নিয়ে বের হওয়ার পরই যেন তারা যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি বা উদ্যোক্তা হতে পারে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার দল কঠোর অবস্থানে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, "আমরা দুর্নীতির জড় কেটে বা উপড়ে ফেলতে চাই। ক্ষমতায় না গেলেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।" এছাড়া, দেশে ন্যায়-বিচার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, পবিত্র কোরআনের নির্দেশিত পথে প্রত্যেকের ন্যায়-বিচার নিশ্চিত করা হবে এবং আইন অপরাধীকে নয়, বরং তার অপরাধকে দেখবে। তিনি আইনি প্রতীক 'দাঁড়ি পাল্লা' কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এই প্রতীক ধরে রাখার অঙ্গীকার করেন।

অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান অভিযোগ করেন, লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনীতিকে নষ্ট করে 'ফোকলা' করে ফেলা হয়েছে। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, সদিচ্ছা, সততা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে রুগ্ন অর্থনীতিকে চাঙা করা সম্ভব।

নারী ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, তারা মেয়েদেরকে 'মা হিসেবে সম্মান' দেবেন এবং নারীরা সভ্যতার মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন। ভিন্নধর্মীদের সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে এবং দেশে সত্যিকার কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করে অহিংস মানবিক জাতি গঠন করা হবে।

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরকে 'হায়েনার তাণ্ডব' এবং 'জুলাই বিপ্লব'কে আল্লাহর গজব ও লানত থেকে জাতিকে হেফাজত করার প্রতীক উল্লেখ করে তিনি প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বন্ধ করে জালিমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের আহ্বান জানান এবং স্থায়ী কনস্যুলেট স্থাপন, এনআইডি রেজিস্ট্রেশনে তারিখ বাড়ানো, পুলিশ ভেরিফিকেশন বন্ধ ও বিমান বন্দরে হয়রানি বন্ধসহ বাফেলো প্রবাসীদের সমস্ত দাবি ক্ষমতায় গেলে পূরণ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামী যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র অধ্যাপক ড. নাকীবুর রহমান এবং ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী ডা. খালিদুজ্জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।