রাজনীতি

সরকার উৎখাতের বৈঠক: রাজিবপুরে পুলিশের হাত কামড়ে আসামি ছিনতাই, জনশূন্য গ্রাম

সরকার উৎখাতের বৈঠক: রাজিবপুরে পুলিশের হাত কামড়ে আসামি ছিনতাই, জনশূন্য গ্রাম

কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে ‘জুলাই সনদ বাতিল’ সংক্রান্ত পোস্টার টানানো এবং সরকার উৎখাতের উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে অভিযান চালাতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার মুখে পড়েছে পুলিশ। এই হামলায় পুলিশের ছয় সদস্য আহত হন এবং আটক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে মব সৃষ্টি করে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটেছে।

সরকার উৎখাতের পরিকল্পনায় চর সাজাই মন্ডলপাড়া গ্রামে গোপন মিটিং চলছিল—এই সংবাদের ভিত্তিতে রাজিবপুর থানা পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। অভিযানের সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ছক্কুর নেতৃত্বে থাকা নেতাকর্মীরা পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করেই ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।

চর রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ হুমায়ুন কবির ছক্কুকে আটক করে। এরপরই আওয়ামী লীগ কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে (মব সৃষ্টি করে) পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এই হামলার এক পর্যায়ে তারা পুলিশের একজন সদস্যের হাত কামড়ে আহত করে এবং আটক নেতাকে ছিনিয়ে নেয়। হামলায় এসআই গোলাম মোস্তফা, এএসআই আহসান হাবিব, এএসআই জয়ন্ত, কনস্টেবল ইয়াসিনসহ মোট ছয়জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

এই গুরুতর ঘটনায় পুলিশ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৩০০–৪০০ জনকে আসামি করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনসহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে। ওসি নিশ্চিত করেছেন, এই মামলায় উত্তর চর সাজাই মন্ডলপাড়া এলাকার রহিম আহম্মেদ (২৫) ও ইয়াকুব আলি (২৫) নামের দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের পুলিশ স্কটের মাধ্যমে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে থমথমে। গ্রামবাসী জানিয়েছে, মামলা হওয়ার পর থেকেই চর সাজাই মন্ডলপাড়া গ্রাম প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে। অনেক বাসিন্দা নিরাপত্তার আশঙ্কায় এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। এই ঘটনা স্থানীয় রাজনীতিতে এক চরম অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে এবং আইনের শাসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।