রাজনীতি

উপদেষ্টারা নির্লিপ্ত, পিএস-এপিএসদের দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে না: রুমিন ফারহানা

উপদেষ্টারা নির্লিপ্ত, পিএস-এপিএসদের দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে না: রুমিন ফারহানা

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ এবং তাদের কার্যকারিতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন। তার মতে, গত এক বছর দুই মাসের শাসনব্যবস্থা দুর্নীতি দমন এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের আমল থেকে খুব বেশি ভিন্ন নয়।

রুমিন ফারহানা বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে যেভাবে পিওনের মতো ব্যক্তিরা ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছিলেন, তেমনি এই সরকারের মন্ত্রি পদমর্যাদায় থাকা উপদেষ্টাদের এপিএসদের দুর্নীতির খবর আসছে। তিনি অভিযোগ করেন, সেই সময়ের মতো বর্তমানেও দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দৃষ্টান্ত দেখা যায় না, যা সরকারের নির্লিপ্ততাকে প্রমাণ করে।

তিনি উপদেষ্টাদের স্বচ্ছতার অভাব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুরুতেই সকল উপদেষ্টার সম্পদের হিসাব দেওয়ার কথা বললেও এখনো তা জনসমক্ষে আসেনি। রুমিন ফারহানা মনে করেন, এটি জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার নীতিকে দুর্বল করে।

বিশেষ করে, তিনি ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অভিযোগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো সঠিক না হলেও সেগুলোকে খারিজ করার জন্য ন্যূনতম একটি তদন্তের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু সেই তদন্তও হতে দেখা যায়নি। অন্যান্য উপদেষ্টাদের পিএস-এপিএসদের বিরুদ্ধেও 'ভয়াবহ রকম অভিযোগ' আসার কথা উল্লেখ করে তিনি মনে করেন, উপদেষ্টাদের সরাসরি সম্মতি (পজিটিভ নডিং) ছাড়া তাদের কর্মীদের পক্ষে এত বড় লুটপাট করা সম্ভব নয়।

প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে রুমিন ফারহানা বলেন, যারা সরকারের সমালোচনা করেন, তাদের ভাষায় প্রধান উপদেষ্টা হয়ে তিনি নির্লিপ্ত। দেশে কী হচ্ছে না হচ্ছে, দেশ গোল্লায় যাচ্ছে কি না—তা নিয়ে তার 'কিচ্ছু যায় আসে না', অথবা তিনি বিষয়টিকে 'খেলোচ্ছলে' নিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশ চালানোটা খেলাধুলা নয় এবং এর সঙ্গে ১৬ কোটি মানুষের ভাগ্য জড়িত।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা দেশের চেয়ে বিদেশে থাকাকে এবং দেশীয় গণমাধ্যমের চেয়ে বিদেশি গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়াকে বেশি স্বস্তিদায়ক মনে করেন। রুমিন ফারহানার মতে, এই নির্লিপ্ততা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য খুব স্বস্তিদায়ক নয়, যারা দেশেই জীবন পার করতে বাধ্য।