রাজনীতি

শেরপুরে ধর্ম প্রচার ও লাঠির মিছিলে ধোঁয়াশা: বিএনপি-জামায়াত পাল্টাপাল্টি মামলা-অভিযোগ

শেরপুরে ধর্ম প্রচার ও লাঠির মিছিলে ধোঁয়াশা: বিএনপি-জামায়াত পাল্টাপাল্টি মামলা-অভিযোগ

শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষিমারী ইউনিয়নে নির্বাচনী গণসংযোগে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দলই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও সংবাদ সম্মেলন করেছে, যা স্থানীয় রাজনীতিতে এক ধরনের ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছে।

গত শুক্রবারের কথিত হামলায় জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম স্বপনসহ জামায়াতের ১৫-২০ জন নেতাকর্মী আহত হন। জামায়াত নেতারা এই ঘটনায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের দায়ী করেন এবং থানা ঘেরাও করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন। জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, তাদের এমপি পদপ্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম গণসংযোগে গেলে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দেন এবং লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালান।

অন্যদিকে, ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরই জেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে জামায়াতের অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, জামায়াতের লোকজন মসজিদ-মাদ্রাসায় গিয়ে ধর্ম প্রচারের নামে ৫০০ করে টাকা দিয়ে শপথ করাচ্ছেন যাতে তাদের ভোট দেওয়া হয় এবং ভোট দিলে জান্নাতে যাওয়া যাবে এমন কথা বলে জনগণের সাথে প্রতারণা করছেন। তিনি জামায়াতের লাঠিসোটার ওপরে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে মিছিল-সমাবেশ করার কঠোর সমালোচনা করেন এবং এটিকে পতাকা অবমাননা বলে আখ্যায়িত করেন।

অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে মিছিলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে জামায়াতের লোকজন তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং পরে তারা পালিয়ে যান। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, জামায়াত মিথ্যা মামলা দিয়ে ডাকপাড়া গ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করার চেষ্টা করছে। বিএনপি নেতাকর্মীরাও সংবাদ সম্মেলন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

তবে, বিএনপির সংবাদ সম্মেলনের পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতে ইসলামী আবার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে। জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাফিজুর রহমান বিএনপির আহ্বায়কের বক্তব্যকে ভদ্র আচরণের পরিপন্থীসামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সহায়ক বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি হামলাকারী হিসেবে মিজানুর রহমান, লুৎফর রহমান তারেক, মামুনুর রশিদ, মাহফুজুল ইসলামসহ ১০-১২ জন বিএনপি কর্মীর নাম উল্লেখ করেন এবং এই হামলাকে নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগের ক্ষেত্রে শঙ্কা বলে উল্লেখ করেন। সদর থানার ওসি জুবায়দুল আলম জানিয়েছেন, অভিযোগের তদন্ত চলছে। জামায়াত এই ঘটনার প্রতিবাদে রোববার বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে।