সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো ক্ষমতাচ্যুত নেত্রীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণার সমাগত। যে ধরনের অপরাধে তিনি অভিযুক্ত, তাঁর আমলেই অনেককে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল এবং যাবজ্জীবন দণ্ডকে ফাঁসি দেওয়ার দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চ হয়েছিল—যেখানে তাঁর দলের প্রকাশ্য সমর্থন ছিল। এই প্রেক্ষাপটে রায়ের ফলাফল কী হবে, তা নিয়ে গোটা দেশেই ব্যাপক দুশ্চিন্তা ও কৌতূহল বিরাজ করছে।
এই উদ্বেগের মধ্যেই নেত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় ঢাকায় একটি ক্ষণিকের রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। নেত্রীর বক্তব্য শুনে তার সমর্থকরা আওয়ামী লীগের পক্ষে স্লোগানে মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার কমপক্ষে এগারটি স্পটে মাঠে নেমেছিল। তবে এই মিছিল ও বিক্ষোভের ঘটনা ক্ষণিকের হলেও, এই তৎপরতা চালাতে গিয়ে ১৩১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার হতে হয়েছে। এই গ্রেপ্তারের ঘটনায় সমর্থক ও নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে, যেখানে অনেক নেতাকর্মী নিজেদের পূর্বের 'আকাম কুকাম' নিয়ে ভীত এবং দেশছাড়া, সেখানে নেত্রীর উস্কানিমূলক বক্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বর্তমান আরপিও অনুযায়ী, বিভিন্ন মামলায় পলাতক ব্যক্তিরা নির্বাচন করতে পারবেন না, এই বিধান যুক্ত হওয়ায় অনেক নেতাই এখন নির্বাচনের অযোগ্যতার সম্মুখীন। এমনকি নেত্রী নিজেও একই কাতারে পড়তে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছে।
অন্যদিকে, নেত্রীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের রায় কী হয়, তা নিয়ে গোটা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ভিনদেশ থেকে নজর রাখছেন এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার নির্দেশ দিচ্ছেন। গত সপ্তাহব্যাপী বিমানবন্দরের ভিলেজ কার্গোসহ একাধিক জায়গায় আগুন লাগার মতো নাশকতার ঘটনায় অনেকেই নেত্রী এবং তার দলের দিকে আঙ্গুল তুলছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কিছু হলেই নেত্রীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর পেছনে গভীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। এই পরিস্থিতিতে নেত্রীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের রায় এবং তার পরবর্তী রাজনৈতিক পরিণতি কী হবে, সেদিকেই দৃষ্টি রেখেছে সবাই।
