জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং সরকারের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের চতুর্থ ধাপের কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) তাদের এই বিক্ষোভ দেশের সকল জেলা শহরে অনুষ্ঠিত হয়। দলটির নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে দাবি মানা না হলে কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত তারা, যার দায় সরকারকে বহন করতে হবে।
বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখনো তৈরি করা হয়নি। যে মৌলিক সংস্কার ও পরিবর্তনের জন্য ছাত্র-জনতা জীবন উৎসর্গ করেছে, সে বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় জনমনে হতাশা তৈরি হচ্ছে। নেতৃবৃন্দের মতে, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মূল দাবি-দাওয়া উপেক্ষা করা এবং জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি নিয়ে আলোচনা এড়িয়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তাদের কর্মসূচিতে মূলত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, জুলাই সনদের আইনী ভিত্তির জন্য সাংবিধানিক আদেশ জারি করা এবং এর ভিত্তিতে পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা। এছাড়া, তারা নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, গণহত্যার বিচার এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার ও বিচারকালীন কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণের দাবি জানিয়েছে।
দলটির অভিযোগ, সরকার শুরু থেকেই সংস্কার ও বিচারের কাজে সহায়তা গ্রহণ করলেও কোনো আইনীভিত্তি ছাড়াই জুলাই সনদ তৈরি করেছে। পাশাপাশি, গণহত্যাকারী ও তাদের দোসরদের উদ্ধত আচরণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা জনগণকে ক্ষুব্ধ করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে।
নেতৃবৃন্দ সতর্ক করেছেন যে, এই ৪র্থ ধাপের কর্মসূচির পর যদি সরকার জনগণের দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা আরও কঠোর এবং লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দিতে পারেন। তারা মনে করেন, জনগণের মৌলিক অধিকার ও বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন থামবে না।
