রাজনীতি

সুশাসন ও দুর্নীতি দমনেই কর্মসংস্থান: প্রধান উপদেষ্টার কাছে জামায়াতের নতুন বার্তা

সুশাসন ও দুর্নীতি দমনেই কর্মসংস্থান: প্রধান উপদেষ্টার কাছে জামায়াতের নতুন বার্তা

দেশের আগামী নির্বাচন এবং সুশাসন নিশ্চিতকরণের বিষয়ে নিজেদের বার্তা দিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অনুষ্ঠিত ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন: রাজনৈতিক দলের কাছে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এই বার্তা দেন। অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ ও প্রথম আলোর যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আবদুল্লাহ তাহের তার বক্তৃতায় জানান, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় জামায়াতের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। তাদের দাবি, আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন যদি সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত না হয়, তবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যেন সেই নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন দেবেন—এমন স্পষ্ট ঘোষণা জাতিকে দেন। এছাড়া, তিনি বলেন, দলগুলো আচরণবিধি লঙ্ঘন না করার অঙ্গীকার করবে এবং প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলে অবাধ নির্বাচন সম্ভব।

গোলটেবিল বৈঠকে জামায়াত নেতা তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কেও আলোকপাত করেন। সভা পরিচালকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় যেতে পারলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই কর্মসংস্থান সম্ভব হবে দুটি মৌলিক কারণে: প্রথমত, দুর্নীতি যাতে না হয়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং দ্বিতীয়ত, সুশাসন নিশ্চিত ও প্রশাসনের সর্বত্র জবাবদিহি নিশ্চিত করা গেলে দুর্নীতি কমানো যাবে। তিনি মনে করেন, দারিদ্র্যের অন্যতম বড় কারণ হলো দুর্নীতি। জামায়াত একটি মৌলিক পরিবর্তনের লক্ষ্যেই কাজ করছে।

দেশের নেতৃত্ব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে আবদুল্লাহ তাহের বলেন, বাংলাদেশে বহু পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু পরবর্তীতে যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ না করে দুর্নীতি, নেতিবাচক কাজ ও বৈষম্য তৈরি করে পরিবর্তনের সুযোগটা নষ্ট করেছে। তবে তিনি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া জুলাই অভ্যুত্থানে আসা পরিবর্তনকে ব্যতিক্রম হিসেবে দেখার কথা জানান। তিনি উল্লেখ করেন, এই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ৮০ শতাংশ মানুষই কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, অথচ পরিবর্তনের পর এই শ্রেণিটি অবহেলার শিকার হয়েছে।

তিনি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের ভেতরে পরিবর্তন এনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান। তার মতে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে যারা জিতবে, জামায়াত তাদের সমর্থন দেবে। তিনি মনে করেন, গত ৫৪ বছরে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়াটা দেশের ব্যর্থতার পেছনে একটি বড় কারণ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদসহ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন এবং নাগরিক সমাজের অনেক প্রতিনিধি এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নেন।