রাজধানীর দারুসসালামে শ্বশুরবাড়িতে চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে মুক্তি পেলেন এক পাকিস্তানি নারী। ২৫ বছর বয়সী ওই নারী তার স্বামী নোবেল আহমেদ (২৭) এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন ও তাকে একটি ঘরে বন্দি করে রাখার অভিযোগ এনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেছিলেন। এই সময়ে তার পাসপোর্টও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল বলে তিনি পুলিশকে জানান।
৯৯৯-এ কল পাওয়ার পর কনস্টেবল সুমাইয়া জাহান এবং প্লাবন দেবের মাধ্যমে খবর পেয়ে দারুসসালাম থানা পুলিশ দ্রুত তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে ওই নারীর অবস্থান চিহ্নিত করে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। ৯৯৯ এর ডিসপ্যাচার এসআই বিরেন চন্দ্র দাশ পুরো উদ্ধার কার্যক্রমটি তত্ত্বাবধান করেন।
উদ্ধার হওয়া পাকিস্তানি নারীর কাছ থেকে জানা যায়, তার মাত্র তিন মাস বয়সী একটি শিশুসন্তান রয়েছে এবং তিনি বাংলাদেশ থেকে দ্রুত নিজ দেশ পাকিস্তানে ফিরে যেতে চান। এই চাওয়ার ভিত্তিতে পুলিশ তার স্বামী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের থানায় উপস্থিত হতে নির্দেশ দেয়।
পুলিশের তৎপরতায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী নোবেল আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা থানায় উপস্থিত হয়ে তার পাসপোর্ট ফেরত দেন। একইসঙ্গে তারা লিখিতভাবে এই মর্মে অঙ্গীকার করেন যে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে তারা শিশুটির পাসপোর্ট তৈরি করে মা ও শিশু উভয়ের পাকিস্তানে ফেরত যাওয়া নিশ্চিত করবেন। পরিবারের পক্ষ থেকে এমন আশ্বাস আসার পর এবং তার ননদ তাকে জিম্মায় নেওয়ায়, ভুক্তভোগী নারী তাৎক্ষণিকভাবে স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্রুত হস্তক্ষেপের ফলে নির্যাতনের শিকার নারীটি নিরাপত্তা ফিরে পান এবং তার দেশে ফেরার পথ সুগম হয়। তবে, এই ঘটনা বাংলাদেশের মাটিতে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের প্রতি পারিবারিক নির্যাতনের মতো সংবেদনশীল সমস্যাকে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে।
