ধর্ম ও শিক্ষা

৯৭ দিনের আইসিইউ পর্ব শেষে বাড়ি ফিরল দগ্ধ নাভিদ

৯৭ দিনের আইসিইউ পর্ব শেষে বাড়ি ফিরল দগ্ধ নাভিদ

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের সেই ভয়াবহ ট্র্যাজেডির ৯৭ দিন পর, জীবন-মৃত্যুর কঠিনতম সংগ্রাম শেষে হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাভিদ নেওয়াজ। সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট তাকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দিয়েছে।

ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক ডা. মারুফুল ইসলাম জানান, নাভিদের চিকিৎসা ছিল অত্যন্ত জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং। শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হওয়া এই ছেলেটি মোট ২২ দিন আইসিইউতে ছিল, যার মধ্যে ১০ দিনই তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখতে হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হওয়ায় দুইবার তার পরিবারকে দুঃসংবাদের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতেও বলা হয়েছিল। এটি নাভিদের পরিবারের জন্য এক বিরাট মানসিক ধকল ছিল।

ডা. মারুফুল ইসলামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নাভিদকে ৩৫ দিন হাইডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখার পর ৪০ দিন কেবিনে রাখা হয়। তার পুরোপুরি সুস্থতা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকরা মোট ৩৬ বার ছোট-বড় অপারেশন সম্পন্ন করেছেন, যার মধ্যে ৮ বার চামড়া প্রতিস্থাপন অন্তর্ভুক্ত। এটি ওই দুর্ঘটনার দগ্ধ রোগীদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক সার্জারি।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন নাভিদের সুস্থ হয়ে ওঠার পেছনে তার অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ফুসফুসে পানি জমার কারণে লাইফ সাপোর্টে উপুড় করে শুইয়ে চিকিৎসা দেওয়ার মতো কঠিন চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হয়েছে চিকিৎসক দলকে।

সোমবার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নাভিদের বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মতে, ছেলের এই ফিরে আসা যেন এক নতুন জীবন ফিরে পাওয়া।

মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়া মোট ৫৭ জন রোগীর মধ্যে নাভিদের মতো ৩১ জন ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে পাঁচ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং এই ঘটনায় মোট ২৯ জন মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করা হয়। ৯৭ দিনের এই যুদ্ধের সমাপ্তি নাভিদের জীবনে নতুন আশার সঞ্চার করলো।