মানিকগঞ্জের সিটি ড্রিম হোটেল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমন্বয় সভায় সোমবার সন্ধ্যায় দলের আদর্শিক ভিত্তি নিয়ে এক বড় ধরনের সংঘাত সামনে এসেছে। এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা ওমর ফারুকের মধ্যে এই সংঘাত প্রকাশ্যে রূপ নেয়।
সভার মঞ্চে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও জামায়াতের নেতা রয়েছে—ওমর ফারুকের এমন সরাসরি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই বাগবিতণ্ডার সূত্রপাত। ওমর ফারুক মঞ্চে উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতাকে সরাসরি 'দালাল' আখ্যা দিয়ে মঞ্চে তার থাকার কারণ জানতে চান। এই প্রশ্নেই এনসিপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আদর্শগত সংঘাতের বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
ওমর ফারুকের এই প্রশ্নে সারজিস আলম তাকে সভার পরে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ওমর ফারুক তার অবস্থান থেকে সরেননি, বরং প্রশ্ন করেন, "আমরা এখানকার স্টেকহোল্ডার... এখানে এনসিপির প্রগ্রাম, ছাত্রলীগের দালাল কেন এ সভায়? জামায়াত কেন?" এই পর্যায়ে সারজিস আলম বিতর্কিত মন্তব্য করেন: "জামায়াতের কেউ কি এনসিপি করতে পারবে না? মনে হচ্ছে, আপনার সমস্যা।" সারজিস আলমের এই মন্তব্য এনসিপির রাজনৈতিক আদর্শ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে সারজিস আলম ওমর ফারুককে হলরুমের এক কোনায় নিয়ে যান এবং সেখানে তাদের মধ্যে উচ্চস্বরে তর্ক চলতে থাকে। এই সময় সারজিস আলম সাংবাদিকদের ক্যামেরা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে সাংবাদিকদের কাছ থেকে তিনি প্রতিবাদ পান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা হিসেবে ওমর ফারুক তার ক্ষোভ প্রকাশ করে সারজিসকে বলেন, "যখন আপনাদের আমাদের দরকার হয়, তখন আমাদের ডাকেন। আর মঞ্চে দালালদের জায়গা দেওয়া হয়।" এই মন্তব্য স্পষ্ট করে যে, এনসিপির মতো নতুন প্লাটফর্মে পুরোনো ও বিতর্কিত রাজনৈতিক শক্তিগুলোর জায়গা করে নেওয়াকে সহজভাবে দেখছেন না অনেক স্টেকহোল্ডার। এই ঘটনা এনসিপির অভ্যন্তরীণ কাঠামোর দুর্বলতা এবং আদর্শিক স্বচ্ছতার অভাবকেই নির্দেশ করে।
