জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন রূপরেখা শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর সংস্কার কার্যক্রম এবং আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন। তার মতে, জামায়াত নিম্নকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বর (পিআর) দাবি তুলে সংস্কারের নামে ভাঁওতাবাজি করছে, কারণ পিআর মূলত উচ্চকক্ষের জন্যই যুক্তিযুক্ত।
নাসীরুদ্দীন অভিযোগ করেন, বিএনপি ও জামায়াত আগামী জাতীয় নির্বাচনে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ক্ষমতায় আসতে চাইছে। তিনি বলেন, এক দল সরকারি হতে চাচ্ছে এবং আরেক দল বিরোধী হতে চাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এক দল ভারতে এক পা দিয়েছে, আরেক দল পাকিস্তানে—যা দেশের মানুষ দেখতে চায় না। তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি-জামায়াত পূর্বে চারদলীয় জোটে থাকলেও, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে তাদের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, তা জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশের মাধ্যমে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
তিনি জামায়াতকে তাদের ঐতিহাসিক ভুলগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, তাদের সামনে এখন যথেষ্ট সুযোগ এসেছে জনগণের পক্ষে দাঁড়ানোর। জুলাই সনদ স্বাক্ষর করার পরও কেন এনসিপিকে এই দলীয় রাজনীতি নিয়ে জনসমক্ষে কথা বলতে হচ্ছে, সে বিষয়ে তিনি উষ্মা প্রকাশ করেন।
গণভোটের সময়কাল নিয়ে এনসিপি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, এনসিপি মনে করে জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। তাদের আশঙ্কা, একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট হলে রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের দ্বারা মানুষ ভয়ভীতির শিকার হতে পারে এবং জুলাই সনদের বিষয়ে স্বাধীনভাবে রায় দিতে পারবে না।
এনসিপি'র খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই গোলটেবিলে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, খালেদ সাইফুল্লাহ, জাবেদ রাসিন, যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন। বৈঠকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ইসলামি দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন, যা জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে চলমান জাতীয় বিতর্কের গুরুত্বকে তুলে ধরে।
