দেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলো নিয়ে একটি বৃহৎ জোট গঠিত হচ্ছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র নেতৃত্বে এই জোটে এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ এবং বাম-প্রগতিশীল ঘরানার ছয়টি রাজনৈতিক দলসহ মোট ৯টি দল এক প্ল্যাটফর্মে আসছে। জোট গঠনের এই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করেছেন শীর্ষনেতারা।
গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়কদের হাত ধরে আত্মপ্রকাশ করেছিল এনসিপি। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গুঞ্জন ছিল যে এনসিপি হয় বিএনপি না হয় জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবে। একই ধরনের গুঞ্জন ছিল জামায়াতের সংস্কারপন্থি দল হিসেবে পরিচিত এবি পার্টিকে ঘিরেও। তবে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু স্পষ্ট জানিয়েছেন, তারা কোনো প্রধান বিরোধী দলের সঙ্গে নয়, বরং জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের নয়টি দল নিয়ে নতুন জোট গঠন করছেন। এই জোট গঠনের বিষয়ে ইতোমধ্যে দুই দফা ফলপ্রসূ আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে এবং দ্রুতই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই জোটে যুক্ত হতে যাওয়া নয়টি দলের মধ্যে রয়েছে বাম ও প্রগতিশীল ঘরানার ছয়টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত প্ল্যাটফর্ম 'গণতন্ত্র মঞ্চ'। গণতন্ত্র মঞ্চের দলগুলো হলো—নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি এবং জেএসডি। গণতন্ত্র মঞ্চের বাইরে এই জোটে আসছে এনসিপি, এবি পার্টি এবং গণ অধিকার পরিষদ। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমীন এবং গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূরসহ অন্যান্য দলগুলোর নেতারা জোটের বিষয়ে আশাবাদী হলেও আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে ক্যামেরার সামনে বিস্তারিত খোলাসা করতে চাননি।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ মনে করেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভোটকেন্দ্রিক এই ধরনের জোট গঠন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতি বিশ্লেষকরা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে মনে করছেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগবিহীন পরিস্থিতিতে বিএনপি ও জামায়াত প্রধান দুটি শক্তি। এই প্রেক্ষাপটে এনসিপির নেতৃত্বে গঠিত এই নতুন জোটটি নিজেদেরকে একটি তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রমাণ করতে পারবে কিনা, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
আটকে থাকা অমীমাংসিত বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করে আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বড় দলগুলোর সঙ্গে ভোটের লড়াইয়ে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে এই নতুন ৯ দলীয় জোট।
