রাজনীতি

এনজিও প্রতিনিধিদের তৈরি নিয়ম মানবেন নির্বাচিতরা? সংবিধান সংস্কার রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন

এনজিও প্রতিনিধিদের তৈরি নিয়ম মানবেন নির্বাচিতরা? সংবিধান সংস্কার রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তার মতে, জনগণের প্রতিনিধি না হয়েও এই কমিশনের সদস্যরা যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তা নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ওপর চাপানো এক চরম ঔদ্ধত্য। তিনি বলেন, "ছিল ঘোড়ার ডিম এখন ওখান থেকে বের হয়েছে একটা খচ্চরের বাচ্চা।"

মাসুদ কামাল জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের চূড়ান্ত রিপোর্ট সরকারকে দিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, সরকার একটি 'জুলাই জাতীয় সনদ সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫' জারি করবে। এরপর রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরের মাধ্যমে এটি অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর হবে। নির্বাচনের পর যারা এমপি নির্বাচিত হবেন, তাদের নতুন নামকরণ হবে 'সংবিধান সংস্কার পরিষদ'। এই পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে।

তবে এই প্রক্রিয়ায় মাসুদ কামালের আপত্তি হলো, সংবিধান সংস্কার পরিষদ কিন্তু নিজেদের ইচ্ছামতো কোনো পরিবর্তন করতে পারবে না। জুলাই সনদে যা দেওয়া আছে, হুবহু সেটাই বাস্তবায়ন করতে হবে—এর বাইরে তারা আর কিছু করতে পারবেন না।

এই ব্যবস্থার সমালোচনা করে মাসুদ কামাল বলেন, বদিউল আলম মজুমদার, ড. আলী রীয়াজ, মনির হায়দার-এর মতো ব্যক্তিরা, যারা মূলত এনজিও প্রতিনিধি বা একাডেমিক, তারা মিলে একটি নিয়মকানুন করবেন। আর জনগণ যাদের নির্বাচিত করবে দেশ পরিচালনার জন্য, তাদের এই করে দেওয়া কাজের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা থাকবে না—এমন চিন্তা 'ছেলেমানুষি কাণ্ড কারখানা' ছাড়া আর কিছু নয় বলে তিনি মনে করেন।

কমিশনের সদস্যদের গণভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে মাসুদ কামাল কঠোর চ্যালেঞ্জ দেন: যাদের তিনি নাম উল্লেখ করেছেন, তারা বাংলাদেশের যেকোনো আসন থেকে নির্বাচন করলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে কিনা, তা দেখার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, যেসব ব্যক্তির জনগণের কাছ থেকে জামানত রক্ষা করার ক্ষমতা নেই, তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন—এটাই তোমাকে পালন করতে হবে, এটাই বাস্তবায়ন করতে হবে। আর এই নির্দেশ মানতে হচ্ছে জনগণের প্রতিনিধিদের। তার মতে, জনগণের প্রতিনিধিদের প্রতি এই ধরনের ঔদ্ধত্যের কোনো সীমা থাকা উচিত। তিনি এই কমিশন রিপোর্টের প্রক্রিয়াকে 'ঘোড়ার ডিম' থেকে বের হওয়া 'খচ্চরের বাচ্চা' হিসেবে আখ্যায়িত করেন, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য শুভ নয়।