সীমান্ত সন্ত্রাস মোকাবিলায় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর কঠোর মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। আজ বুধবার পার্লামেন্ট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে কোনো হামলা হলে ইসলামাবাদ নিশ্চিতভাবে ‘আফগানিস্তানের গভীরে’ আঘাত হানবে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ আজ ভোরে তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার ঘোষণার পর এই বক্তব্য দেন। তথ্যমন্ত্রী জানান, আফগান মাটি থেকে শুরু হওয়া সীমান্ত সন্ত্রাস মোকাবিলায় দুপক্ষ ‘কার্যকর সমাধানে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে’। খাজা আসিফ এই ব্যর্থতার জন্য কাবুলের 'আন্তরিকতার অভাবকে' দায়ী করেন। তার অভিযোগ, চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হওয়া সত্ত্বেও কাবুল তা তিন বা চারবার আটকে দিয়েছে, এবং এর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া এসেছে কাবুলের দিক থেকে।
আফগান তালেবান সরকারের বৈধতা নিয়ে খাজা আসিফ একাধিক প্রশ্ন তোলেন। তিনি দাবি করেন, আফগানিস্তানের বর্তমান অন্তর্বর্তী প্রশাসন ‘একটি রাষ্ট্রের সংজ্ঞা পূরণ করে না’। তার মতে, হাতে গোনা কয়েকটি দেশ ছাড়া এর কোনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই এবং পুরো আফগানিস্তানে তাদের কর্তৃত্ব নেই। তার অভিযোগ, আফগানিস্তান কার্যত খণ্ড খণ্ড হয়ে গেছে এবং সেখানে এক বা একাধিক প্রভাবশালী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী রয়েছে। তিনি কৌতুক করে বলেন, ভালো বোঝাপড়ার সম্ভাবনা নিয়ে শুধু প্রার্থনা করা যেতে পারে, তবে “এর কোনো ওষুধ নেই।”
প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও দাবি করেন, কাবুলের পুরো নেতৃত্ব ভারতের হাতে খেলছে এবং তাদের ‘এজেন্ট’ হয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, “তারা যদি তাদের লাগাম দিল্লির হাতে তুলে দিয়ে থাকে, তাহলে এটি কঠিন হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, কাবুল নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) হামলা চালানো থেকে বিরত রাখার বিষয়ে একমত হলেও, তা লিখিতভাবে দিতে রাজি হচ্ছিল না।
খাজা আসিফ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, কাবুলের নেতারা যদি সংঘাতের পথ বেছে নিয়ে থাকেন, ‘তাহলে তাই হোক’। তিনি এই পরিস্থিতিকে আফগান তালেবানের নিজেদের দেশকে ২০০১ সালের ডিসেম্বরে তোরাবোরায় মার্কিন সামরিক অভিযানের মতো পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা হিসেবে দেখেন।
এদিকে, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে আলোচনা ভেঙে যাওয়ায় জাতিসংঘ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশ্বসংস্থাটি আশা প্রকাশ করে বলেছে, “আবার লড়াই শুরু হবে না,” যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর গুরুত্ব তুলে ধরে।
