ভারতের বিহারে বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথম নির্বাচনী প্রচারণায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তার অর্থনৈতিক নীতির ওপর চড়া আক্রমণ চালালেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। বুধবার মুজাফফরপুরের জনসভা থেকে তিনি অভিযোগ করেন, মোদীর নোট বাতিল এবং জিএসটি-র মতো নীতিগুলো কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়ে দেশের ছোট ব্যবসাগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
বেকারত্ব এবং শিল্পের স্থানীয়করণের বিষয় উল্লেখ করে রাহুল জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রাখেন, "আপনাদের মোবাইল ফোনের পিছনে কী লেখা আছে বলুন তো? মেড ইন চায়না। কিন্তু এটা মেড ইন চায়না নয়, এটা মেড ইন বিহার হওয়া উচিত ছিল।" তিনি দাবি করেন, মোবাইল, শার্ট, প্যান্ট – সবকিছুই বিহারে তৈরি করা উচিত, যাতে রাজ্যের স্থানীয় যুবকরা চাকরি পায় এবং কর্মসংস্থানের জন্য বাইরে যেতে না হয়।
প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরুদ্ধে ভোট চুরির গুরুতর অভিযোগও আনেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, তারা (বিজেপি) আপনাদের ভোট চুরি করতে ময়দানে নেমেছে। কারণ তারা এই নির্বাচনটাকে একটা রোগে পরিণত করতে চায়। রাহুল অভিযোগ করেন, বিজেপি মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানাতেও ভোট চুরি করেছিল এবং এবার বিহারেও সেই একই চেষ্টা তারা চালাবে।
ভোট পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদির 'নাটকীয়তা' নিয়েও কটাক্ষ করেন রাহুল। তিনি বলেন, মোদি কেবল আপনাদের ভোট চান। রাহুল রসিকতা করে বলেন, আপনারা যদি মোদিকে মঞ্চে এসে নাচ করতে বলেন, তিনি নেচেও দেবেন। তবে এই সুবিধা ভোটের আগেই নিতে হবে, কারণ ভোটের পরে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ছট পূজার সময় দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির গোসলের ঘটনাকে 'নাটক' বলে অভিহিত করেন রাহুল। তিনি বলেন, ছট পূজায় ভক্তরা যেখানে দূষিত যমুনা নদীতে ডুব দিয়ে প্রার্থনা করেছেন, সেখানে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে তৈরি একটি পুকুরে গোসল করে নাটক করেছেন। রাহুল দাবি করেন, মোদিজির সঙ্গে যমুনা নদী বা ছট পূজার কোনো সম্পর্ক নেই, তার কেবল আপনাদের ভোট প্রয়োজন।
এই প্রচারে রাহুল গান্ধীর পাশে ছিলেন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা এবং বিরোধী মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তেজস্বী যাদব। এদিকে, রাহুলের মন্তব্যের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি। বিজেপির মুখপাত্র প্রদীপ ভান্ডারি রাহুলের মন্তব্যকে 'স্থানীয় গুন্ডার মত' বলে অভিহিত করে বলেন, রাহুল ভোটার এবং ভারতীয় গণতন্ত্রকে উপহাস করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে ভোট দেওয়া দরিদ্র বিহারবাসীদের অপমান করেছেন।
বিহারের ২৪৩ বিধানসভা আসনের জন্য আগামী ৬ এবং ১১ নভেম্বর দুই দফায় ভোট নেওয়া হবে এবং গণনা হবে ১৪ নভেম্বর।
