রাজনীতি

নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা, জাতীয় পার্টিকে বিচারের আহ্বান নুরের: ইসি’র সাথে বৈঠক

নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা, জাতীয় পার্টিকে বিচারের আহ্বান নুরের: ইসি’র সাথে বৈঠক

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তার আলোচনার মূল বিষয় ছিল নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং জাতীয় পার্টির ভূমিকা।

নুরুল হক নুর বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ফ্যাসিবাদী শক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আইনগতভাবে তাদের বিচার হচ্ছে। তাই আইনগতভাবে তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ না দেওয়া উচিত। তিনি একইসঙ্গে জাতীয় পার্টিকেও এই ফ্যাসিবাদীর দোসর হিসেবে চিহ্নিত করে নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ বন্ধের দাবি জানান। তিনি বলেন, এখানে মূলত আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির মূল যোগসাজশটা ছিল, যেখানে একটি দল ক্ষমতা এবং অপরটি বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতো।

তিনি ইসির কাছে জাতীয় পার্টিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারের মুখোমুখি করার এবং খুনের মামলা ও দুর্নীতির মামলায় জড়িত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, তারা আসলে কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে পারে না। এমন সিদ্ধান্ত কেবল সরকার বা আদালতই নিতে পারে। এই প্রতিক্রিয়ায় নুর সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলে জাতীয় পার্টিকেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

নুর নির্বাচন নিয়ে তার আশাবাদ ব্যক্ত করেন, কারণ ছোট-বড় সব দলের প্রার্থীরা এখন নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয়। তবে, তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি বিভাজন চলতে থাকে, তাহলে নির্বাচন যথাসময়ে হবে না এবং এটি বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি সতর্ক করেন, নির্বাচন বিলম্বিত হলে দেশ চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। এই পরিস্থিতি এড়াতে নির্বাচন কমিশন যেন সরকার প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে একটি ভূমিকা নেয়, সেই বিষয়েও তিনি অনুরোধ জানান।

জোটভুক্ত হয়ে নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিষয়ে ইসির বিধান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নুর জানান, কমিশন মনে করিয়ে দিয়েছে যে, ঐকমত্য কমিশনেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। জোট গঠনের বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদ আপাতত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। দল হিসেবে তারা এখন ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই, পরিচিতি এবং গণসংযোগ নিয়ে কাজ করছে। তবে, বিএনপির সঙ্গে তাদের পুরনো বন্ধুত্ব রয়েছে, জামাতের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। এছাড়াও, বিএনপি-জামাতের বাইরে একটি বিকল্প রাজনৈতিক জোট গঠন করা যায় কিনা, সে বিষয়েও আলাপ আলোচনা চলছে।