আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্রের কারবার ও ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কায় নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, কক্সবাজারসহ দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র চোরাচালান বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সানতু জানিয়েছেন, অস্ত্র উদ্ধারে কিছুটা সন্তোষজনক অগ্রগতি থাকলেও তারা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন এবং তাদের অস্ত্র উদ্ধারের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এই উদ্বেগের কেন্দ্রে রয়েছে দুটি মূল বিষয়: প্রথমত, অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে অত্যাধুনিক অস্ত্রের অবাধ প্রবেশ; এবং দ্বিতীয়ত, থানা থেকে লুট হওয়া বিশাল সংখ্যক আগ্নেয়াস্ত্রের হদিস না পাওয়া। সিএমপি’র তথ্য অনুযায়ী, চুরি যাওয়া ১৫৫টি অস্ত্র এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, যার ফলে এগুলো অপরাধী চক্রের হাতে চলে যাওয়ার জোর সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এই নিখোঁজ অস্ত্রগুলো বর্তমানে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আসা অস্ত্রগুলো মূলত ব্যবহৃত হচ্ছে সন্ত্রাসীদের দ্বারা। ছোট আকারের পিস্তল, রিভলবার থেকে শুরু করে চায়না রাইফেল পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র তাদের হাতে রয়েছে। শুধু বিদেশি নয়, স্থানীয়ভাবে তৈরি অস্ত্রও সন্ত্রাসীরা ব্যবহার করছে। বাঁশখালী, রাঙ্গুনিয়া, কক্সবাজার ও মহেশখালীর পাহাড়ি এলাকায় ছোট ছোট অস্ত্র তৈরির কারখানা চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছে র্যাব-৭। র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল হাফিজুর রহমান নিশ্চিত করেন যে, দেশীয় অস্ত্র উৎপাদনে বড় কারখানার প্রয়োজন হয় না, বরং ছোট পরিসরেই এগুলো তৈরি হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কৌশল পরিবর্তন করছে। তাদের প্রধান মনোযোগ এখন অস্ত্র চোরাচালানকারী, বেচাকেনায় জড়িত চক্র এবং তাদের মূল হোতাদের চিহ্নিত করার দিকে। নির্বাচনে অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে—এই শঙ্কা মাথায় রেখে অস্ত্র কারবারিদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে এবং তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নিবিড়ভাবে কাজ করছে। সামগ্রিকভাবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এই অস্ত্র কারবারিদের চিহ্নিতকরণ এবং গ্রেপ্তার করাই এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য।
