ঢাকা, নভেম্বর ২০২৪: কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতীতের দেশত্যাগ নিয়ে প্রচলিত 'পলায়ন' তত্ত্বের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তিনি ব্যাকরণগত এবং বাস্তবতার নিরিখে এটিকে ভুল বলে ব্যাখ্যা করেছেন এবং এর সঙ্গে জড়িত ঐতিহাসিক ও আইনি প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন।
সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে কাদের সিদ্দিকী বলেন, "এখন যারা বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। ব্যাকরণগত দিক থেকে এটাকে আমি মানি না। শেখ হাসিনা পালায়নি।" তিনি যুক্তি দেন যে, 'পলায়ন' শব্দটি সাধারণত গোপন বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে কোনো স্থান ত্যাগ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে ঘটনাটি ছিল ভিন্ন।
কাদের সিদ্দিকীর মতে, "শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে এখান থেকে ভারতে পাঠানো হয়েছে। ভারত তাকে গ্রহণ করেছে।" তিনি এই বক্তব্যের সপক্ষে প্রমাণ হিসেবে বলেন, যদি তিনি পালিয়ে যেতেন, তাহলে অন্য কোনো হেলিকপ্টার বা সাধারণ যাত্রীবাহী বিমানে যেতেন। কিন্তু শেখ হাসিনা গিয়েছিলেন সেনাবাহিনী বা বিমান বাহিনীর বিমানে এবং ভারতে গিয়ে তিনি সাধারণ যাত্রীবাহী বিমানবন্দরে না নেমে সামরিক বিমান ঘাঁটিতে অবতরণ করেছিলেন। এই ঘটনাপ্রবাহ স্পষ্ট করে যে, এটি কোনো আত্মগোপন বা পলায়ন ছিল না, বরং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সম্পন্ন একটি যাত্রা।
অন্যদিকে, কাদের সিদ্দিকী আইনের শাসনের প্রতি তার দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ আসে, তবে "আইনত এর প্রতিকার করতে হবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।" তিনি আইনের শাসনকে সমর্থন করবেন, কিন্তু একই সঙ্গে তিনি এমন অবস্থানকে সমর্থন করেন না যেখানে শেখ হাসিনাকে 'আইনের ঊর্ধ্বে' বলে মনে করা হয়। আবার, যারা আইন ছাড়াই তার বিচার করতে চান, সেই উদ্যোগকেও তিনি সমর্থন করেন না। তার বক্তব্য পরিষ্কার: দেশের সর্বোচ্চ পদে থাকা ব্যক্তিও আইনের আওতাভুক্ত, তবে তার বিচার বা প্রতিকার হতে হবে সঠিক আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
কাদের সিদ্দিকীর এই বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের প্রতি তার সম্মানের বার্তা বহন করলেও, আইনের শাসন এবং ঘটনার বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণের গুরুত্বকেও সমানভাবে তুলে ধরে।
