কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী নির্বাচন কমিশনকে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দৃঢ়তার সাথে মন্তব্য করেন, নির্বাচন কমিশন যদি জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ সুইজারল্যান্ডের চেয়েও বেশি শান্তিপূর্ণ দেশে পরিণত হতে পারে।
বঙ্গবীর বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারকে বাইরে রেখে বাংলাদেশে কোনো ভালো নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তিনি নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করে বলেন, যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত না হয়, তবে ‘আওয়ামী লীগ ইলেকশন বন্ধ করার চেষ্টা করবে।’
তিনি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উদাহরণ দিয়ে বলেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়লে সেখানে গুন্ডা বা অশুভ শক্তির কোনো জায়গা থাকে না। গত নির্বাচনের ফলাফল উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেন, ২১টি কেন্দ্রের সিল করা ফলাফলে অসংগতি দেখা গেছে, যেখানে ৪টা ১৩ মিনিটে ১৭০৮টি ভোট থাকলেও পরে তা বেড়ে ২৬০০ হয়ে যায়—যা ইসির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
বর্তমান সরকারের সমালোচনামূলক দৃষ্টিপাত করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, বর্তমান সরকার দেশটিকে সাংঘাতিকভাবে বিভক্ত করে ফেলেছে। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার পতন হলেও স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধ বিলুপ্ত হবে না, কারণ এগুলো দেশের মূল ভিত্তি। তিনি এ প্রবণতার সমালোচনা করেন যেখানে 'শেখ হাসিনাকেই বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ এবং মুক্তিযুদ্ধ' হিসেবে তুলে ধরা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি তার অবিচল অবস্থান তুলে ধরে তিনি জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেন। তিনি বলেন, খেলাফত আন্দোলনসহ সব ইসলামপন্থী দলকে তিনি সম্মান করেন, কিন্তু জামায়াতকে ততক্ষণ সম্মান করা হবে না যতক্ষণ না তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধাচরণের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চায়। বঙ্গবীর আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, "আমাকে হত্যা করা গেলেও মিথ্যা বলানো যাবে না।" পরিশেষে, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিজের রাজনৈতিক পিতা উল্লেখ করে ইসিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা যদি ভালো ভোট করতে পারেন, তবে জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
